কিছুদিন আগেই তনিষ্কের একটি বিজ্ঞাপনকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। যেখানে দেখা গিয়েছিল, একজন হিন্দু যুবতীর সাধভক্ষণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন তাঁর শাশুড়ি। যিনি একটি বিশেষ ধর্মের। ওই বিজ্ঞাপনের পরেই শুরু হয় দেশজোড়া বিতর্ক। কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের তরফে অভিযোগ করা হয়, এর মাধ্যমে লাভ জিহাদের প্রচার করা হচ্ছে। এই আবহেই গত মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মার বৈঠকে ‘লাভ জিহাদ কেস’-এর সংখ্যাবৃদ্ধি ও মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর এর পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কমিশন জানিয়েছে, রেখা শর্মা রাজ্যপালকে বলেছিলেন, মহারাষ্ট্রে ‘লাভ জিহাদ’ বাড়ছে। ভিন্ন ধর্মের নারীপুরুষের পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে বিবাহ এবং ‘লাভ জিহাদ’-এর পার্থক্যের ওপরে তিনি জোর দেন। দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীগুলি ‘লাভ জিহাদ’ বলতে মুসলিম পুরুষের সঙ্গে হিন্দু নারীর বিবাহ বোঝায়। তাদের মতে, এইভাবে কৌশলে হিন্দু নারীদের ধর্মান্তকরণ করা হয়। মহিলা কমিশন থেকে রাজ্যপালের সঙ্গে রেখা শর্মার বৈঠকের ছবি টুইট করা হয়। তাতে লেখা হয়, আমাদের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কোভিড সেন্টারে মহিলা রোগীদের ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ এবং লাভ জিহাদের সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ে কথা হয়েছে।
এই টুইটের পরেই তোলপাড় হয় সোশ্যাল মিডিয়া। এর বিরোধিতা করে একের পর এক মন্তব্য করেন নেটিজেনরা। এক ব্যক্তি যেমন লেখেন, ‘জাতীয় মহিলা কমিশন ও তার চেয়ারপার্সন কি দয়া করে ব্যাখ্যা করবেন লাভ জিহাদ কাকে বলে? কয়েকটি কট্টরপন্থী গোষ্ঠী ওই কথাটি বলে যা বোঝাতে চায়, আপনারাও কি তাই বোঝাতে চাইছেন? যদি তাই হয়, তাহলে আপনারা কি অন্যের ব্যাপারে নাক গলানো অনুমোদন করছেন।’ আর এক ব্যক্তি লেখেন, ‘ব্যাপারটা খুবই আপত্তিকর। লাভ জিহাদ কথাটা ব্যবহার করা কি সংবিধানসম্মত?’ ‘স্যাকরেখাশর্মা’ নামে হ্যাশট্যাগ দিয়ে অনেকে মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিও তুলেছে। বিশিষ্ট আইনজীবী করুণা নন্দী টুইট করে বলেন, ‘নারীবিদ্বেষী এক মহিলাকে মহিলা কমিশনের শীর্ষে বসানো হয়েছে। এতে বোঝা যায়, মোদী সরকার মহিলাদের অধিকার নিয়ে আদৌ ভাবিত নয়।’