করোনাকে হার মানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মৃত্যুর কাছে নতিস্বীকার করতে হল কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী তথা অভিনেতা এস পি বালাসুব্রহ্মণ্যমকে। ৭৪ বছর বয়সে থেমে গেল দক্ষিণী তারকা জীবনের চাকা। চেন্নাইয়ের বেসরকারি হাসপাতালে আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।
গত ৫ আগস্ট করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন এস পি বালাসুব্রহ্মণ্যম। নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন সেকথা। অনুরাগীদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, সামান্য উপসর্গ রয়েছে তাঁর। চিকিৎসকরা বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের বাকি সদস্যদের কথা মাথায় রেখে হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। তার কিছুদিন কাটতে না কাটতেই খবর আসে কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। কোমায় চলে গিয়েছিলেন এস পি বালাসুব্রহ্মণ্যম। পরে সংগীতশিল্পীর ছেলে এসপিবি চরণ জানান, কোমা থেকে বেরিয়ে এসেছেন এস পি বালাসুব্রহ্মণ্যম। তবে তারপরও তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল।
২৪ আগস্ট আচমকা খবর রটে করোনা মুক্ত হয়ে গিয়েছেন সংগীতশিল্পী। কিন্তু পরে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন বালাসুব্রহ্মণ্যম। তাঁর শরীরে কোভিড ১৯ ভাইরাসের উপস্থিতি প্রতিনিয়ত মনিটর করা হচ্ছে। ৭ সেপ্টেম্বর বালাসুব্রহ্মণ্যমের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু তারপরও ভেন্টিলেশনে রাখতে হয় তাঁকে। ২৪ সেপ্টেম্বর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় আর তারপর আজ এই দুঃসংবাদ।
সংগীত জগতে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যম। ১৯৪৬ সালে নেল্লোরের তেলুগু পরিবারে জন্ম কিংবদন্তি সংগীত শিল্পীর। ছোটবেলা থেকেই সংগীতের প্রতি অনুরাগ। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সময় বিভিন্ন সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। জয়ীও হতেন। সিনেমায় নেপথ্য গায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া তেলুগু ছবু ‘শ্রী শ্রী মর্যাদা রামান্না’র হাত ধরে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কখনও। তেলুগুর পাশাপাশি তামিল, কন্নড়, মালয়ালম, হিন্দি সিনেমায় সমানতালে গান গেয়ে গিয়েছেন। বলিউডে তাঁর সিনেমার তালিকায় রয়েছে ‘ক্রিমিনাল’, ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’, ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’, ‘রোজা’-র মতো ছবি। গানের পাশাপাশি অভিনেতা হিসেবেও দর্শকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছেন এস পি।
অনুরাগীদের শোকস্তব্ধ করে ইহজগতকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি। রেখে গেলেন একরাশ সুরেলা স্মৃতি। শিল্পীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন সারা দেশের বিনোদন জগতের বিশিষ্টরা।
