রবিগানের সুর বুকে নিয়ে সুরলোকে পাড়ি দিলেন বিখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পূর্বা দাম। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি অসুস্থ ছিলেন, চিকিৎসাও চলছিল। চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে শনিবার সকালে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়। প্রয়াত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীর প্রয়াণে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতার সম্পর্ক ছিল। দু, একবার মমতার অনুরোধ মেনে রাজ্য সরকারের কয়েকটি অনুষ্ঠানেও গান শুনিয়েছিলেন প্রবীণ শিল্পী। অসুস্থতার সময়ে তাঁর খোঁজখবর রাখতেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে কিছুটা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের তরফে শোকবার্তা পাঠানো হয়। পূর্বা দামের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রবীণ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলার সংগীত জগৎ।
পূর্বা দামের জন্ম ১৯৩৫ সালে, কলকাতায়। গোড়া থেকেই প্রাণ টানতে রবীন্দ্রনাথের গান, সুর। পরবর্তী সময়ে সেই গানকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন পূর্বা দাম। তাঁর শিক্ষয়িত্রী ছিলেন আরেক প্রখ্যাত শিল্পী – সুচিত্রা মিত্র। তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘রবিতীর্থ’-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন সুচিত্রা মিত্রের অত্যন্ত স্নেহধন্যা পূর্বা দাম। আশির দশক থেকে শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন তিনি। একক অথবা দ্বৈতকণ্ঠে একের পর এক রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবামের দৌলতে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। আকাশবাণীতে রেকর্ডিং তাঁর কণ্ঠ ছড়িয়ে দিয়েছিল সর্বত্র। ‘সীমার মাঝে অসীম তুমি’, ‘যদি তোমার দেখা না পাই প্রভু’, ‘সন্ধ্যা হল গো ও মা’ – এসব গান তাঁর কণ্ঠে শুনলে অন্য আবেগ সঞ্চারিত হল শ্রোতার প্রাণে। রবিঠাকুরের সৃষ্ট কথা, সুর অপূর্ব লাবণ্যময় হয়ে উঠত তাঁর বিশেষ গায়কিতে।