গালওয়ানে ভারত-চীন সঙ্ঘর্ষ পরবর্তী সময়ে চীনা আগ্রাসন নিয়ে একপ্রকার মুখে কুলুপই এঁটে রেখেছে মোদী সরকার। লাল ফৌজ যে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে, সরাসরি সে কথা স্বীকার করতে চাননি খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। যদিও ২৯-৩০ আগস্ট রাত থেকে শুরু করে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় অন্তত চারটি চীনা আগ্রাসনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যেই আরও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে প্যাংগং এলাকায়, যা বুধবারই প্রথম সামনে এসেছে। ৪৫ বছরের রীতি ভেঙে নজিরবিহীন ভাবে একটি ঘটনায় ১০০ থেকে ২০০ রাউন্ড সতর্কতামূলক গুলি চলছে। দু’পক্ষই শূন্যে গুলি চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক সরকারি আধিকারিক।
ওই সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্যাংগং-এর উত্তর উপকূলে ফিঙ্গার ৩ এবং ফিঙ্গার ৪ এর সংযোগস্থলে এই ঘটনা ঘটেছে। ৭ সেপ্টেম্বর শূন্যে গুলি চালানোর ঘটনা আগেই সামনে এসেছিল। গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট (আগে কোনও পক্ষেরই সেনা ছিল না সেখানে) ভারতীয় জওয়ানরা দখল করে নেয়। ভারতীয় সেনাকে সরাতে সশস্ত্র চীনা বাহিনী তাদের ঘিরে ফেলে। তবে শূন্যে গুলি চালিয়ে ফিরে যায়। ৭ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনা নিয়ে নয়াদিল্লী-বেজিং দু’পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলে বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু বড় মাপের এই গোলাগুলির ঘটনা নিয়ে এখনও কোনও পক্ষই বিবৃতি দেয়নি।
ওই আধিকারিক বলেন, ২৯-৩০ আগস্ট রাতে চীন সেনা ভারতীয় ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের জওয়ানরা তা রুখে দেওয়ার পর থেকেই আগ্রাসী হয়ে ওঠে চীনা সেনা। ভারতীয় সেনাকে সরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল চীনের বাহিনী। তার জেরেই এত বড় ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করেছেন ওই আধিকারিক। প্যাংগং লেকের দক্ষিণ উপকূলে চুসুল সাব সেক্টরে দু’পক্ষের সেনার মধ্যে ব্যবধান ৩০০ মিটারেরও কম। ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত ভারতীয় ভূখণ্ড হলেও দীর্ঘদিন ধরেই চীনা সেনা এই চারটি ফিঙ্গার পয়েন্ট দখল করে রেখেছে। আর যে এলাকায় গুলি চলেছে, সেখানে দু’পক্ষের সেনার মধ্যে দূরত্ব ৫০০ মিটারের মতো, জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।