সুশান্ত সিংহ রাজপুতের রহস্য মৃত্যু মামলায় মিলল আরও একধাপ সাফল্য। শুক্রবার সকাল থেকেই নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর ম্যারাথন জেরা শুরু করেছিল অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর ভাই শৌভিক চক্রবর্তীকে। সেই জেরাতেই বেরিয়ে এল ভয়ঙ্কর তথ্য। “দিদি রিয়া চক্রবর্তীই আমায় মাদক আনতে বলেছিল। তিনি মাদক আনার পর রিয়া এবং সুশান্তের বাড়ির ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা তা একসঙ্গে বসে সেবন করতেন। এমনকী আরও বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁকে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল।” এনসিবির দুঁদে অফিসারদের চাপে এমনই তথ্য স্বীকার করলেন শৌভিক। তাঁর কথায়, দিদির জন্যই বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছিলেন। স্যামুয়েলও ছিলেন মাদকাসক্ত। তারপরই এদিন সন্ধ্যায় শৌভিককে গ্রেফতার করল এনসিবি।
শৌভিকের সূত্র ধরেই আরও পাঁচজনের হদিশ পেয়েছে পুলিশ, যারা ড্রাগ পাচার করত। এদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে জানা গিয়েছে। মিরান্ডার বিরুদ্ধেও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে থাকবে শৌভিক। চলবে জেরা। শুক্রবার সকালেই শৌভিককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেন এনসিবি-র কর্তারা। এনসিবি-র এই গ্রেফতারিতে খুশি হয়েছেন মৃত অভিনেতার দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি। টুইট করে তিনি নার্কো কর্তাদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
এদিন সকালে রিয়া চক্রবর্তী এবং স্যামুয়েল মিরান্ডার বাড়িতে তল্লাশি চালান এনসিবি তদন্তকারীরা। এমনকী রিয়ার গাড়ি, ল্যাপটপ সবেতেই তল্লাশি করা হয়। ড্রাগের খোঁজে বান্দ্রার একটি ফুটবল ক্লাবেও তল্লাশি চালান নার্কোটিকস কট্রোল ব্যুরোর কর্তারা। সেখানেই তাঁরা জানতে পারেন শৌভিক ড্রাগের খোঁজে তাঁদের ক্লাবেও গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই সোহেল নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হয় শৌভিকের। সেই ব্যক্তিই রিয়া-শৌভিককে গাঁজা সরবরাহ করতেন। ইতিমধ্যেই এনসিবি-র তরফে নোটিশ পাঠানো হয়েছে রিয়াকে। খুব শীঘ্রই তাঁকে তলব করা হয়েছে জানানো হয়েছে।
সুশান্তের মৃত্যুতে মাদক যোগের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে ইডিও। ২০১৭ থেকেই নিয়মিত মাদক নেন রিয়া। তাঁর হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাট সূত্রেই সে সব তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। রিয়া ও শৌভিকের সঙ্গে তৃতীয় এক ব্যক্তির নিষিদ্ধ মাদকের ছবি চালাচালি হয় এইবছরের এপ্রিল-মে নাগাদ। ওই হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাটেই বলা হয় সুশান্তের কফির মধ্যে কীভাবে মাদক মেশাতে হবে। ইডি এই সব নথি তুলে দিয়েছে এনসিবি-র হাতে। এর প্রেক্ষিতেই রিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। জেরায় সৌভিক আরও জানিয়েছেন, রিয়ার নির্দেশেই তিনি সুশান্তকে কড়া মাত্রার ওষুধ দিতেন।