বছর তিনেক আগে এক হাড়হিম করা ঘটনা ঘটেছিল বাঁকুড়ায়। প্রেমিককে খুন করে সিমেন্টের গাঁথুনি দিয়ে ঢালাই করে দিয়েছিল এক যুবক। আর আজ ছিল সেই ঘটনার সাজা ঘোষণার দিন। আকাঙ্ক্ষা খুনের ঘটনায় বিচারক ওই যুবককে যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছেন।
বাঁকুড়ার যুবক উদায়ন দাস সোশ্যাল মিডিয়ায় সূত্রে আলাপ জমায় আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে। উদয়ন থাকতো মধ্যপ্রদেশের ভোপালের সাকেতনগরে। আমেরিকায় ইউনিসেফে কাজ করে বলে ওই যুবক জানায় আকাঙ্ক্ষাকে। ওই সংস্থায় আকাঙ্ক্ষাকে চাকরি দেওয়ার কথা জানায় সে। এরপর আকাঙ্ক্ষাকে একটি ভুয়ো নিয়োগপত্র দেয় উদয়ন। তারপর আমেরিকায় যাওয়ার নাম করে আকাঙ্ক্ষা ২০১৬ সালের ২৩ জুন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সঙ্গে ছিল উদয়ন।
এরপর মধ্যপ্রদেশের সাকেতনগরে উদায়নের বাড়ি পৌঁছে বুঝতে পারে বড় ভুল করে ফেলেছেন আকাঙ্ক্ষা। প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বুঝতে পেরে তাদের মধ্যে শুরু হয় ঝগড়া। এরপর ১৫ জুলাই উদয়ন শ্বাসরোধ করে খুন করে আকাঙ্ক্ষাকে। তারপর তাঁর দেহ বাড়ির মধ্যে একটি টিনের বাক্সে ভরে সিমেন্ট ঢালাই করে দেয়। শুধু তাই নয়, ২০১০ এ নিজের বাবা মাকেও খুন করে বাগানে পুতে দেয় এই গুনধর ছেলে। পুলিশের জেরার পরে তা স্বীকার করে উদয়ন।
আকাঙ্ক্ষাকে খুন করার পর সেই বছরই অক্টোবরে উদয়ন বাকুড়ায় আসে। এদিকে ‘আমেরিকায় থাকা’ আকাঙ্ক্ষা ফোন না ধরায় চিন্তায় পড়ে যান তার বাড়ির লোকজন। এরপর তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ এরপর আকাঙ্ক্ষার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে জানতে পারে সেটি আছে ভোপালের সাকেতনগর এলাকায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে খোঁজ মেলেনি আকাঙ্ক্ষার। এরপর উদয়নের বিরুদ্ধে আকাঙ্ক্ষাকে অপহরণের মামলা দায়ের করেন পরিবারের লোকজন।
তারপর ১ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়া জেলা পুলিশ ভোপালে গিয়ে গ্রেফতার করে উদায়নকে। তারপর তাকে জেরা করে খুনের কথা জানতে পারে। এরপর উদ্ধার করা হয় আকাঙ্ক্ষার দেহাবশেষ।