জম্মু-কাশ্মীরের রাজনীতিতে বড় মোড়। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের বর্ষপূর্তির দিনই উপ-রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিলেন গিরিশ চন্দ্র মুর্মু। ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই উপত্যকার নতুন সাংবিধানিক প্রধান ঠিক করে ফেলল কেন্দ্রীয় সরকার।
জম্মু ও কাশ্মীরের পরবর্তী লেফটেন্যান্ট গভর্নর হচ্ছেন গাজিপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিনহা। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর লোকসভা কেন্দ্রের তিন বারের সাংসদ ছিলেন মনোজ সিনহা। প্রথম নরেন্দ্র মোদী সরকারে রেলপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। কিন্তু উনিশের ভোটে গাজিপুরে বহুজন সমাজ পার্টির প্রার্থী আফজল আনসারির কাছে হেরে যান ৬১ বছর বয়সী মনোজ। এবার তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীরের সাংবিধানিক প্রধান করল কেন্দ্র। আগামী কাল, ৭ অগস্ট শপথ নিতে পারেন রাজীব।
অন্যদিকে জিসি মুর্মুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। খবরে প্রকাশ, সম্প্রতি একাধিক বিষয় নিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের প্রথম উপ-রাজ্যপাল গিরিশ চন্দ্রের সঙ্গে কেন্দ্রের বনিবনা হচ্ছিল না। ২০১৮ সাল থেকে জম্মু-কাশ্মীরে ভোট থমকে আছে। রাজ্যের মর্যাদা হারানোর পরে সেখানে প্রথম বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বর্ষীয়ান এই প্রাক্তন আইএএস অফিসার যে পথ নিয়েছিলেন তা কেন্দ্রের পথের সঙ্গে মিলছিল না। আসন পূণর্বিন্য়াশ না হওয়া পর্যন্ত বিধানসভা ভোট স্থগিত রাখার পক্ষে জম্মু-কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল। ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে তাঁর এহেন মন্তব্যে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশনও; যা একেবারেই নজিরবিহীন। তাতে নাকি অসন্তুষ্ট ছিল কেন্দ্র।
গত বছর নভেম্বরে ছিল জিসি মুর্মুর অবসর। কিন্তু তার আগেই অক্টোবরে দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট জেনারেল করা হয় তাঁকে। জিসি মুর্মুর পদত্যাগের পর সরকারের একটি সূত্রে বলা হচ্ছিল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মহাঋষিকে জম্মু ও কাশ্মীরের নতুন লেফটেন্যান্ট জেনারেল করতে পারে নয়াদিল্লী। তবে তাঁদের কেউ কেউ এও বলছিলেন, কেন্দ্র যদি চায় কাশ্মীরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হোক তাহলে এমন কাউকে দায়িত্ব দিতে পারে যিনি কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সংযোগ রেখে চলতে পারেন। দেখা গেল সেটাই করল নয়াদিল্লী। পোড় খাওয়া রাজনীতিক তথা তিন বারের সাংসদকে জম্মু ও কাশ্মীরের সাংবিধানিক প্রধান করে পাঠাচ্ছে কেন্দ্র।