একদিকে যেমন রোজই দ্রুত হারে বাড়ছে সংক্রমণ, তেমনি আবার একনাগাড়ে লকডাউন চালিয়ে যাওয়াও রাজ্যবাসীর পক্ষে সুখকর নয়। তাই দুদিক বজায় রেখেই মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকে তিনি সিদ্ধান্ত নেন প্রক্ষিপ্ত লকডাউনের। আগের দুদিনের মতো কলকাতা থেকে জেলা, সম্পূর্ণ লকডাউনের তৃতীয় দিনেও পুলিশি কড়াকড়ির ছবি ধরা পড়ছে সর্বত্রই। অপ্রয়োজনে গাড়ি নিয়ে বেরলে চলছে ধরপাকড়। নাকা তল্লাশির সময় পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট কারণ দেখাতে না পারলে, আইনি পদক্ষেপ করছে পুলিশ। চেনা ভিড় উধাও। শুনশান রাস্তাঘাট। বন্ধ বাজার-দোকান। ড্রোনের মাধ্যমেও অলিগলিতে চলছে নজরদারি। সবমিলিয়ে যেন বন্ধের চেহারা কলকাতা থেকে জেলায়।
প্রসঙ্গত, আজ, বুধবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত থাকবে সম্পূর্ণ লকডাউন। স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারি, পরিবহণ বন্ধ। উড়ান এবং রেল পরিষেবাও স্থগিত। এক মাত্র ছাড় রয়েছে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে। আগস্টের ৫, ৮,১৬, ১৭, ২৩, ২৪ এবং ৩১ তারিখে একই নিয়ম বহাল থাকবে। করোনার সংক্রমণ রুখতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কলকাতার ঠাকুরপুকুর থেকে চিড়িয়ামোড়, ইএম বাইপাস, পার্ক সার্কাস, খিদিরপুর, বেলেঘাটা, বেহালা, গড়িয়া, গড়িয়াহাট, রাসবিহারী, যাদবপুর, সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ-সহ শহরের প্রায় সব রাস্তায় পুলিশি ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। পুলিশকর্তারাও বাহিনী নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছেন। মাস্ক না পরলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আবার বড়বাজার, পোস্তা, যদুবাবুর বাজার এলাকায় অন্যান্য দিনে ঠাসা ভিড় থাকে। কিন্তু এদিন ওই সব এলাকায় পুলিশে ছয়লাপ। লকডাউন মানার কথা ঘোষণা হচ্ছে মাইকে। একই ছবি ধরা পড়েছে হাওড়া, শিলিগুড়ি, দুই ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া-সহ প্রায় সমস্ত জেলাতেই। কোচবিহারেও শহরাঞ্চলের রাস্তাঘাট শুনশান। সেখানে যেন বনধের চেহারা। উত্তরের দুই মালদাতেও একটি রকম কড়াকড়ি। ইংরেজবাজার থেকে মালদা টাউনে পুলিশি টলহদারি চোখে পড়ার মতো। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের কলোনী মোড়ে এ দিন ব্যস্ততার ছবি ধরা পড়েনি। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে নাকা তল্লাশি চলছে। লকডাউনের নিয়ম না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বারাসত পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরেও আগের দু’দিনর ছবিই ধরা পড়েছে।