এই করোনা আবহের মধ্যেও যখন রেলের বেসরকারিকরণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে মোদী সরকার, চলছে ছাঁটাই, আর্থিক বছরে প্রায় ১৫ লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর পেনশনের টাকা মেটানো নিয়ে তৈরি হচ্ছে সংশয়, তখন সামনে এল আরেক চাঞ্চল্যকর খবর। জানা গিয়েছে, আর্থিক সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে এবার রেলের একাধিক প্রকল্পে কোপ পড়তে চলেছে। চলতি বাজেটে ঘোষণা হওয়া অধিকাংশ প্রকল্পের কাজে স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্ত নিল রেলওয়ে বোর্ড।
সেফটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়, এমন সব প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি গত অর্থ বর্ষে শুরু হওয়া কাজের ক্ষেত্রেও যে সমস্ত প্রকল্পে কাজ এগোয়নি খুব একটা সেই সব প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল বোর্ড। ব্যতিক্রম হিসেবে কোনও কাজ করতে গেলে লাগবে অর্থ মন্ত্রকের অনুমতি। অর্থ মন্ত্রকের পাঠানো এক গাইড লাইনের পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত প্রক্রিয়া জানিয়ে দেওয়া হল রেলের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে।
খরচ কমানোর জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা ভাল। যদিও সেই পরিকল্পনা বাস্তবতা কতটা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রেলের প্রাক্তন আধিকারিকরা। ফিনান্সিয়াল কমিশনারের চিঠির প্রেক্ষিতে রেল বিশেষজ্ঞদের ধারণা প্রকল্পের অবস্থা আরও একবার দেখা উচিত। প্রয়োজনে সেফটি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় চালু রেখে বাকি কাজ স্থগিতের কথা বলছেন তারা। অন্যদিকে রেলের সহযোগী সংস্থা আই আর সি টি সি-জানাচ্ছে যাদের অবসরের পরে পুনঃবহাল করা হয়েছিল তাদের আপাতত আর কাজ করানো হবে না।
ইতিমধ্যেই ভারতীয় রেলের ফিনান্সিয়াল কমিশনারের তরফ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে রেলের সমস্ত জেনারেল ম্যানেজারদের। একই সঙ্গে রেলের যে সমস্ত পি এস ইউ আছে তাদের খরচে রাশ টানার জন্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। রেল বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভারতীয় রেলের খরচের ৪১ শতাংশ কর্মীদের জন্যে বরাদ্দ হয়ে যায়। পেনশন প্রাপকদের জন্যে বরাদ্দ হয় ২১ শতাংশ। জ্বালানি বাবদ খরচ হয় ১৭ শতাংশ। সব মিলিয়ে ৭৯ শতাংশ খরচ হয়ে যায় এই সব ক্ষেত্রে। বাকি ২১ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খরচ হয়। বাকি ১১ শতাংশ দিয়ে রেলের মতো এত বড় সংস্থার লাভ হবে না বলেই মত রেল আধিকারিকদের।