তিনি যে দলের হাল শক্ত হাতে ধরছেন, তা বোঝা গিয়েছিল সাম্প্রতিক অতীতেই। ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভা থেকে তৃতীয় বার সরকার গড়ার সংকল্প ঘোষণার পরেই দলীয় সংগঠনে ফাঁকফোকর মেরামতের কাজটাও শুরু করতে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী। আজ, বৃহস্পতিবার দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, সব জেলা সভাপতি, পর্যবেক্ষক এবং শাখা সংগঠনের প্রধানদের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে তিনি কী কী পদক্ষেপ করেন, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দলীয় নেতৃত্ব।
ইঙ্গিত রয়েছে, দলে বিবদমান নেতাদের সতর্ক করার পাশাপাশি কিছু জেলার ক্ষেত্রে কঠিন পদক্ষেপ করতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। রাজ্যস্তরের নেতাদের মতে, দলের অন্দরে প্রত্যক্ষ নজরদারি বাড়িয়ে কিছু কঠোর সিদ্ধান্তের জন্য সময় নিচ্ছিলেন মমতা। তাঁদের বক্তব্য, এই বৈঠকে তা জানিয়ে দিতে পারেন দলনেত্রী। যেমন হাওড়া জেলায় পুরোনো এবং নতুন নেতাদের মধ্যে বিবাদের প্রসঙ্গ উঠতে পারে। উত্তরবঙ্গে সংগঠন গোছাতে নতুন দাওয়াই দিতে পারেন মমতা। বিধানসভা ভোটের জন্য দায়িত্ব বদল করতে পারেন পর্যবেক্ষক স্তরেও। এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত একুশে জুলাইয়ের আগে থেকেই নেওয়া ছিল। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল ভাষণে মমতাই জানিয়েছিলেন, শহীদ দিবস মিটলেই তিনি দলকে নিয়ে বসবেন।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় জেলা সভাপতি বদল করা হতে পারে। লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ভরাডুবির কথা মাথায় রয়েছে নেত্রীর। তার পর সংগঠনের দুর্বলতা শুধরানোর চেষ্টা হয়েছে। তবে তা কার্যকরী হয়নি। পর্যবেক্ষকদের ভূমিকাও সেখানে আশানুরূপ নয় বলেই মনে করে রাজ্য নেতৃত্ব। ফলে কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহর মতো জেলায় সভাপতি বদলের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চল তথা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামেও লোকসভা ভোটে বিপর্যয় হয়েছে তৃণমূলের। জেলা সভাপতি বদলের সম্ভাবনা রয়েছে সেখানেও।
বর্তমানে বহু জেলা সভাপতিই আবার মন্ত্রিসভার সদস্য। অনেক দিন ধরে দলের মধ্যে একটা আলোচনা রয়েছে যে, মন্ত্রিসভা ও সংগঠন দু’জায়গাতেই বড় দায়িত্ব থাকার ফলে অনেকে পেরে উঠছেন না। এই পরিস্থিতিতে কারও কারও মন্ত্রিসভার দায়িত্ব কমিয়ে তাঁকে পূর্ণ সময় সংগঠনের কাজ করতে বলা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।