যোগীরাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি নিয়ে বহুদিন ধরেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে খবর মিলেছে। যেমন, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগে যিনি প্রথম স্থানাধিকারী ছিলেন, তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘ভারতের রাষ্ট্রপতির নাম কী?’ ধর্মেন্দ্র প্যাটেল নামে ওই ‘ফার্স্ট বয়’ জানিয়েছিলেন, ‘জানি না।’ আর এরপরই প্রকাশ্যে আসে সেখানে ৬৯০০০ শিক্ষক নিয়োগের ভিতরে রয়েছে ঘুঘুর বাসা, হয়েছে ব্যাপক দুর্নীতি।
এরপরই আসরে নামেন প্রয়াগরাজের পুলিশ সুপার সত্যার্থ অনিরুদ্ধ পঙ্কজ। নিজেদের অধঃস্তন কর্মীদের নিয়ে শুরু করেন তদন্ত। গ্রেফতারও করেন ১১ জনকে। আর এই কাজের জন্য প্রশংসার বদলে উল্টে ‘শাস্তি’ জুটল তাঁর কপালেই। জানা গেছে, তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনও তাঁকে কোথাও পোস্টিংই দেওয়া হয়নি। তবে সেই রাজ্যের পুলিশের দাবি, সত্যার্থের এক নিরাপত্তারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাই তাঁকে আপাতত আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আর ওই পুলিশ সুপারেরও করোনা পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের এই শিক্ষক নিয়োগকে নিজের সরকারের জনমুখী কাজ হিসেবে প্রচার করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু সেই সাফল্য নিয়েও দুর্নীতির ঘোরতর অভিযোগ। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের শিক্ষা দফতর ৬৯ হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগ করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ঘুষ নিয়ে বহু মানুষকে সেই তালিকায় জায়গা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি প্রথমে যায় হাইকোর্টে। অভিযোগের মধ্যে সারবত্তা খুঁজে পেয়েছে আদালতও। তাই শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট।
যদিও হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ের সঙ্গে একমত হয়েই সেই প্রক্রিয়ার ৩৭ হাজার ৩৩৯ পদে নিয়ােগ আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টও। উত্তরপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী সতীশ ত্রিবেদীও এই বিষয়টি আড়ালে স্বীকার করে নিয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে যিনি দুর্নীতির তদন্ত করছিলেন, তাঁকেই বদলি করে দিল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। যা নিয়ে গোটা দেশেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।