রাত তখন ৩টে। দক্ষিণ দিল্লীর একটি ফ্লাইওভারের উপরে মিনিট দশেকের জন্য গাড়ি থামিয়েছিলেন যুবক। ঢিল ছোড়া দূরত্বেই দিল্লীর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিটিউট অব টেকনোলজি। আচমকাই গাড়ির বন্ধ জানলার কাঁচে টোকা পড়ল। তাকিয়ে দেখেন তাঁর মারুতি সুইফট গাড়িটিকে ঘিরে ফেলেছে পাঁচটি বাইক। তাতে সওয়ার কম করেও দশ জন। প্রত্যেকের হাতে লাঠি, আগ্নেয়াস্ত্র। গাড়ির জানলার কাঁচ ভেঙে লাঠির বাড়ি পড়ল যুবকের মাথায়, ছুরি দিয়ে একজন চিরে দিল পা। ছটফট করতে করতে গোটা ওয়ালেটটাই তুলে দিলেন আততায়ীদের হাতে। আর তারপর চেনা ঘটনা! মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে লুঠ করে নেওয়া হল সর্বস্ব।
রাতের দিল্লীতে নিরাপত্তার অভাব নিয়ে প্রশ্ন আগেও উঠেছে। দিল্লী আইআইটির কাছের ফ্লাইওভারে এমন ডাকাতির ঘটনা নাকি নতুন নয়, এমন অভিযোগ স্থানীয়দেরই। এর আগেও বহু মানুষ আততায়ীদের খপ্পরে পড়ে জখম হয়েছেন। তাঁদের সর্বস্ব লুঠ হয়েছে।
ঘটনাটি বুধবার মধ্যরাতের। আইআইটি ফ্লাইওভারের উপরে মারাত্মক জখম অবস্থায় স্পাইসজেটের পাইলটকে উদ্ধার করে পুলিশ। যুবরাজ তেহটিয়া নামে ৩০ বছরের ওই পাইলট এখন ভর্তি ফরিদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গাড়িতে পাইলট ছাড়াও ছিলেন গাড়ির চালক। পুলিশ জানিয়েছে, চালকের কোনও আঘাত লাগেনি।
পাইলট তাঁর বয়ানে বলেছেন, ফরিদাবাদ থেকে দিল্লীর ইন্দিরা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে যাচ্ছিলেন তিনি। কাজের সূত্রেই তাঁকে যেতে হত মুম্বই। রাতে ফ্লাইওভারের উপরে মিনিট দশেকের জন্য গাড়িটি দাঁড় করানো হয়েছিল। ওইটুকু সময়ের মধ্যেই ঘটে যায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনা। যুবরাজ বলেছেন, দশ জন বা তার বেশি আততায়ী ছিল ওই দলে। প্রত্যেকের হাতেই ছিল পিস্তল। গাড়ি ঘিরে ফেলে প্রথমেই একজন জানলার কাঁচ ভেঙে তাঁর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা চায়। অন্য আরেকজন ততক্ষণে ছুরি দিয়ে তার পা চিরে দিয়েছে। গলগল করে রক্ত বার হচ্ছে। প্রাণে বাঁচতে সঙ্গে থাকা সব টাকাই দিয়ে দেন যুবরাজ। তাঁর কথা অনুযায়ী, প্রায় ৩৪ হাজার টাকা লুঠ করে পালিয়েছে ওই ডাকাতদল।