করোনার থাবায় এই মুহূর্তে থরহরিকম্প গোটা দেশ। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে যখন ঢাল-তরোয়াল অর্থাৎ পর্যাপ্ত মাস্ক, প্রোটেক্টিভ অ্যাপ্রন, গ্লাভস ছাড়াই করোনার বিরুদ্ধে সর্বস্ব দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের ডাক্তার, নার্স বা অনান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেই সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। এবার যেমন দিল্লীর এমস-এর আবাসিক চিকিৎসক রাজকুমার শ্রীনিবাসকে ‘শো-কজ’ করা হল এমস কর্তৃপক্ষ।
সকালেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনও হিংসা, গালিগালাজ ও অভদ্র ব্যবহার বরদাস্ত করা হবে না।’ বিকেলেই দিল্লীর এমস-এর আবাসিক চিকিৎসক রাজকুমার শ্রীনিবাসকে ‘শো-কজ’ করলেন এমস কর্তৃপক্ষ।
শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দেশের প্রথম সারির চিকিৎসা কেন্দ্র দিল্লীর এমস-এ ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিম্ন মানের এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিই কিট দেওয়া হচ্ছে বলে সরব হয়েছিলেন। শ্রীনিবাস এমস-এর আবাসিক ডাক্তারদের অ্যাসোসিয়েশনেরও সম্পাদক। যদিও সংগঠনের দাবি, শ্রীনিবাসকে ওই পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শ্রীনিবাসের প্রশ্ন, ‘আমি মাস্ক ও বর্মবস্ত্র নিয়ে যে মিথ্যে দাবি করা হয়েছিল তার বিরোধিতা করেছিলাম। সে জন্য কি আমাকে এখন নতুন চাকরি খুঁজতে হবে?’ তাঁর অনুরোধ, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কথার প্রতি সত্যনিষ্ঠ থেকে আমাকে সাহায্য করুন।’ দিল্লীর এমস-এ প্রায় ২০০ জন ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। সম্প্রতি নিকাশি কাজের সুপারভাইজার মারা গিয়েছেন। তার আগে এক জন মেসের কর্মীরও মৃত্যু হয়েছে।
শ্রীনিবাসের অভিযোগ ছিল, এমস-এর ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের যে সব এন-৯৫ মাস্ক জোগান দেওয়া হচ্ছে সেগুলি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড দূরে থাক, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মানদণ্ডের থেকেও খারাপ। কিন্তু তা নিয়ে মুখ খুললেই এমস কর্তৃপক্ষ এফআইআর করা বা কর্মক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু এমস কর্তৃপক্ষ তাঁকে পাঠানো শো-কজের চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, যখন গোটা দেশ অতিমারির বিরুদ্ধে লড়ছে, তখন এ সব ভিত্তিহীন দাবি স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল নষ্ট করবে। তাঁদের মনে নিজেদের সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে সংশয় তৈরি হবে।