কথায় আছে, একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। ঠিক একই হাল এখন ভারতীয় অর্থনীতির। একে তো মন্দার কোপে ভুগছিল বাজার, এবার গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। আর এই জোড়া ফলায় কার্যত বিপর্যস্ত দেশের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে অতি ধনীদের আয়ে কর বাড়ানো এবং কোভিড ত্রাণ সেস বসানোর প্রস্তাব দিল ৫০ জন তরুণ কর আধিকারিকের একটি দল। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস (সিবিডিটি)-এর কাছে সম্প্রতি একটি নীতিগত প্রস্তাবপত্র পেশ করেছেন তাঁরা। তাতেই কেন্দ্র সরকারকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে সূত্রের খবর, এই প্রস্তাব মানতে নারাজ কেন্দ্র।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ফোর্স (ফিসকাল অপশন অ্যান্ড রেসপন্স টু কোভিড-১৯ এপিডেমিক) নামে ওই নীতিপত্রটিতে রাজস্ব বাড়ানো এবং করোনার প্রভাবে বিধ্বস্ত অর্থনীতির মোকাবিলার কথা বলা হয়েছে। তবে এই প্রস্তাব ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই পদক্ষেপ আদপে আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং শৃঙ্খলাভঙ্গ বলেই মনে করছে কেন্দ্র। ওই নীতিপত্রে প্রস্তাব করা হয়েছে দু’টি বিকল্প পথে অতি-ধনীদের ওপর কর বসানো যেতে পারে- কিছু সময়ের জন্য বা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। কমিটির পরামর্শ, হয় ন্যূনতম ১ কোটি টাকার উপর আয়ে সর্বোচ্চ আয়করের স্তর হোক ৪০ শতাংশ অথবা ৫ কোটি টাকা বা তার উপর সম্পত্তির উপর সম্পত্তি কর ফেরানো যেতে পারে। এভাবে সরকারের হাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা আসতে পারে।
সেই সঙ্গে এই নীতিপত্রে এককালীন ৪ শতাংশ সেস বসানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। একে বলা যেতে পারে, কোভিড রিলিফ সেস। এই বাবদ সরকারের ঘরে ১৫ হাজার কোটি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা আসতে পারে বলে কমিটি মনে করছে। তবে ১০ লক্ষ টাকার উপর আয়েই এই সেস বসানোর কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সরকারকে ৫-১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চিহ্নিত করতে হবে, যা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবে। অতিধনীদের থেকে কর বাবদ আদায় হওয়া অতিরিক্ত অর্থ শুধুমাত্র সেই ৫-১০টি প্রকল্পেই খরচ করতে হবে। কমিটি বলেছে, এই সময় অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে সরকারকে খরচ বাড়াতে হবে এবং তার জন্য আয়ও বাড়ানো দরকার।