বাড়ি ফেরার আবেদন জানিয়ে পাঞ্জাবে খাদ্য অনশনে শুরু করলেন কাশ্মীরের পরিযায়ী শ্রমিকেরা। প্রায় বারোশো পরিযায়ী শ্রমিকেরা এই অনশনে সামিল। পাঞ্জাবের বিভিন্ন স্থানে কোয়ারেন্টাইনে আটকে থাকা এই শ্রমিকদের দাবি, খাবার নয়, কোয়ারেন্টাইন শেষে তাঁরা ফিরতে চান নিজেদের বাড়িতে নিজেদের পরিজনেদের কাছে। তাই খাবার বর্জন করে তাঁরা এই অনশনে সামিল হয়েছেন।
টানা ২১ দিনের লকডাউনে সংক্রমণ রোধে কাশ্মীরের পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছিল পাঞ্জাবের পাঠানকোটে। একদিনের মধ্যে লকডাউনের গুরুত্ব, এর প্রভাব সেই মুহূর্তে বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি পরিযায়ী শ্রমিকদের পক্ষে। বাড়ি ফিরতে না পেরে পাঞ্জানের পাঠানকোটের ৭টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এতদিন ধরে আটকে রয়েছেন তাঁরা। কিন্তু ২১ দিন শেষ, তাতেও বাড়ি ফেরায় তাঁদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াল সেই লকডাউনই। লকডাউনের দ্বিতীয় পর্বেও পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কিন্তু এভাবে আর কত দিন তাঁরা আটকে থাকবেন কোয়ারেন্টাইনে? দুবেলা অন্ন জোগাড় হলেও পরিবারের লোকগুলোর পাশে যেই সময় তাঁদের থাকা সবচেয়ে জরুরী সেই সময়ই তাঁরা আটকে ভিন রাজ্যে। তাই সরকারের কাছ নিজেদের এই দাবি তুলে ধরতে খাবার বয়কট করে অনশনের পথকে বেছে নিলেন তাঁরা।
লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগেই মুম্বইয়ের বান্দ্রাতেই বিক্ষোভ দেখিয়ে পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার শ্রমিকেরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা ভুলে তখন তাঁদের সামনে একটাই লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল বাড়ি ফেরা। বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদের পরিযায়ী শ্রমিকেরাও একটি ভিডিও বানিয়ে সরকারের কাছে পর্যাপ্ত খাবার ও বাড়ি ফেরার দাবি জানান। সেই বিক্ষোভের আঁচ পাওয়া গেল এবার পাঞ্জাবে। তাঁদের কোটারেন্টাইনে থাকার মেয়াদ কাল শেষ হওয়ার পর বাড়ি ফিরতে চেয়েছেন শ্রমিকেরা।
পাঞ্জাবের এক সরকারি আধিকারিক অভিজিৎ কাপলিশের কথায়, ‘জম্মু-কাশ্মীরের সরকার পরিযায়ী শ্রমিকেদর ফিরিয়ে নিয়ে যাবে বলে জানতে পেরেছি। কিন্তু যতক্ষণ না কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি হাতে পাচ্ছি ততক্ষণ তাঁদের কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দিতেও পারছি না।’ তবে পরিযায়ী শ্রমিকদের এই অনশনের কথা জানানো হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসনকে। তাঁরা শ্রমিকদের এই আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে শীঘ্রই তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন বলে জানান।