করোনা মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গোটা দেশজুড়ে চলছে একটানা লকডাউন। প্রথমে ২১ দিনের লকডাউনের ঘোষণা করলেও বিভিন্ন রাজ্যের পরামর্শ মতো সেই লকডাউনের মেয়াদ আগামী ৩ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর ফলে পান খাওয়া বন্ধ হয়েছে একদল মানুষের। তেমনি লক্ষ পান চাষি অনাহারে মরতে বসেছেন।
পান বাজার বন্ধ যেমন, তেমনি ট্রেন বন্ধ থাকে ভিন রাজ্যেও রপ্তানি করা যাচ্ছে না পণ্যটি। হাওড়ার আমতা, উলুবেড়িয়া, শ্যামপুরের ত্রিশ শতাংশ জমিতে পান চাষ হয়। পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুর ও উত্তর দিনাজপুরের একটা অংশ পান চাষের উপর নির্ভরশীল। লকডাউনে এই চাষীদের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে বেঁচে থাকলেও পরবর্তী সময়ে অর্থের অভাবে আর চাষ করতে পারবেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
পান চাষি সমিতির রাজ্য কমিটির সদস্য কাশীনাথ বারিক বলেন, ‘সারা বছর পান বিক্রি হয় যে বাজারে সেগুলি হাওড়ার বাগনান, উলুবেড়িয়া, কালিতলা। আড়তে পানের নিলাম ডাকা হয়। ক্রেতারা কিনে নিয়ে যান। আবার রেলপথে আসাম, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মুম্বইতে পান রপ্তানি হয়। কিন্তু বাজার ও রেল বন্ধ থাকার ফলে বরজেই নষ্ট হচ্ছে পান। যখন একদিকে এই দুর্দশা তখন শিলাবৃষ্টিতে পানের পাতা ফুটো হয়ে খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’
বছরে ছ’মাস ভরতুকি দিয়ে পান চাষ করে চাষিরা। গ্রীষ্ম থেকে পুজো দাম পাওয়া যায় না। পুজোর পর থেকে শীতকাল পর্যন্ত বাজার চড়া হয়। ঠিক সেই সময়ে এই লকডাউনে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। লকডাউনের মধ্যেই পান চাষিদের ক্ষতিপূরণ ও সরকারি অর্থ সাহায্যের জন্য উলুবেড়িয়া মহকুমা শাসকের কাছে দাবিপত্র দিয়েছে রাজ্য কিষান ও খেত মজদুর কংগ্রেস।
রাজ্যের চেয়ারম্যান তপন দাস জানান, সবুজের জন্য লড়াই করেও কৃষিজাত পণ্যের স্বীকৃতি না পাওয়ায় ভরতুকি দিয়ে চাষ করেও কৃষকের সুবিধা পাননা এই চাষীরা। পাশাপাশি পচনশীল দ্রব্য হয়েও রেলে কৃষিজাত সামগ্রী হিসাবে বুকিংয়ের সুযোগ পায়না পান। অথচ বছরে কুড়ি কোটি টাকার পান বুকিং হয় রেলে। ফরেরা চোরাপথে বাংলাদেশে পান পাচার করে। ফলে সরকার বৈদেশিক বাণিজ্যের সুযোগ হারাচ্ছেন।