দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনের আগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা দু’টি ‘ডিপ ফেক ভিডিও’ ব্যবহার করেছিল বিজেপি। দু’টি ভিডিওতে দিল্লীর বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারিকে দু’টি আলাদা ভাষায় কথা বলতে শোনা গিয়েছে। দু’টি ভিডিও দু’টি ভিন্ন ধাঁচের ভোটার গ্রুপের জন্য বানানো হয়েছে। এই ধরনের ভিডিও তৈরি করার সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নকল ভিডিও বানিয়ে তোলা যায়, যাকে দেখে অবিকল আসল বলে মনে হয়। এই ধরনের ভিডিওয় বক্তার মুখে আলাদা কথাও বসিয়ে দেওয়া যায়!
একটি সংবাদ ওয়েবসাইট ৪৪ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে বিজেপির এই ‘ডিপ ফেক ভিডিও’-টি আবিষ্কার করে।
দু’টি ভিডিওর একটিতে মনোজকে হরিয়ানভিতে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। তাতে তিনি দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দেওয়া প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করেছেন। কিন্তু এটি আসল ভিডিও নয়। আসল ভিডিওয় তাঁকে একই কথা বলতে শোনা গেলেও তিনি তা বলছেন হিন্দীতে। সমস্ত ফ্রেম এক। কেবল মুখের অভিব্যক্তি ও ঠোঁটের নড়াচড়া আলাদা। ভিডিওটি ৫,৮০০টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজেপি।
দিল্লী বিজেপির মিডিয়া-ইন-চার্জ নীলকান্ত বক্সী বলেন, ‘বহু মানুষ জানিয়েছেন ভিডিওগুলি বেশ কৌতূহলপ্রদ। বিশেষ করে হরিয়ানভি ভঙ্গির উচ্চারণের ভিডিওটি।’ তিনি আরও বলেন, অনেকেই দাবি করেছেন, ভিডিওটি ইংরেজিতেও কেন ব্যবহৃত হয়নি। তবে বিজেপি জানিয়েছে, এই ভিডিও যে সংস্থা বানিয়েছে তাদের সঙ্গে বিজেপির কোনও চুক্তি হয়নি। নীলকণ্ঠ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সংস্থাটির কোনও চুক্তি হয়নি। আমরা জানি না এটা কোন সংস্থা। আমি কারও সঙ্গে দেখাও করিনি।’
এই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করে ভিডিও বানিয়ে নির্বাচনের সময় যে খুব একটা ব্যবহারের প্রচলন নেই তা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁর এই আশঙ্কাও করছেন কোনও রাজনৈতিক দল এইভাবে বিরোধী নেতাদের নকল ভিডিও বানিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে পারে।
সংবাদটি যিনি সকলের সামনে নিয়ে এসেছেন সেই প্রযুক্তি সাংবাদিক নীলেশ ক্রিস্টোফার জানিয়েছেন, এমন ভাবে নির্বাচনি প্রচারের জন্য ‘ডিপ ফেক’ ভিডিও বানানোর ঘটনা সম্ভবত বিশ্বে এই প্রথম। ওই সংস্থার কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন যে রাজনীবিদের ভিডিও বানাতে চাওয়া হচ্ছে, তাঁর ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ধরে বলা কথার ভিডিওর সাহায্যে ‘এআই অ্যালগরিদম’ ব্যবহার করে এই ধরনের ভিডিও তৈরি করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক ভাবে, সংস্থাটি জানিয়েছিল তারা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই কাজটি করেছে। ওরা বলেছিল হরিয়ানভি-ভাষী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছনোর জন্য ওই ভিডিও তৈরি করা হয়েছিল। এটা একটা ট্রায়াল ছিল। কিন্তু পরে তারা জানায় তারা কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না এ ব্যাপারে।’