বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে কাজে ঢিলেমির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন মন্ত্রী, সরকারি আধিকারিক ও দলীয় নেতা-কর্মীরা। দুর্গাপুরের সৃজনী হলে প্রশাসনিক বৈঠকে শ্রম দফতরের কাজে ঢিলেমি, শিল্প সংস্থা ও ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে মানুষের ক্ষোভের কারণে মন্ত্রী মলয় ঘটক থেকে দুর্গাপুর কর্পোরেশনের মেয়র দিলীপকুমার অগস্তি পর্যন্ত সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর রোষের শিকার হন।
মন্ত্রী মলয় ঘটককে মমতার জিজ্ঞাসা, কেন আপনার দফতরে ৭১ টি কাজ বাকি রয়েছে? এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নাম রিনিউ সহ বিভিন্ন কাজ সাতদিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি দুর্গাপুরে বন্ধ কলকারখানা, শ্রমিক অসন্তোষ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েন মলয় ঘটক, দিলীপকুমার অগস্তি শ্রমিক নেতা প্রভাত চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, ওয়াই কে মোদী সংস্থায় গণ্ডগোল যাই থাকুক, আমি চাই না, কোনও ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ থাকুক। তাঁর কথায়, বিএসএনএল থেকে এয়ার ইন্ডিয়া, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীরা সময়ে মাইনে পাচ্ছেন না, দেশজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা। কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলা ভালো জায়গায় রয়েছে। আর সেটা হয়েছে আমাদের খুচরো বাজার ধরে রাখার কারণে। তাই সময়ে ট্রেড লাইসেন্স না দেওয়া, ট্রেড ইউনিয়নে অযাচিত রাজনীতি, কর্মী ছাঁটাই ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের কড়া নির্দেশ দেন মমতা। এ নিয়ে বিধানসভায় তাঁকে সময় সময় সব খবর জানানোর নির্দেশ দেন তিনি। মন্ত্রী ও মেয়রের উদ্দেশ্যে মমতার মন্তব্য, ভাববেন না, পরে দিদি সব ভুলে যাবে।
আসানসোল এলাকার তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন নেতা প্রভাত চ্যাটার্জি এই প্রেক্ষিতে মমতার তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েন। প্রভাতকে তিনি বলেন, তোমার নামে অনেক অভিযোগ আছে। বারবার সাবধান করলেও তুমি নিজেকে শুধরে নেওনি। তোমার জন্য দলের এবং সরকারের বদনাম হচ্ছে। তোমাকে পরিষ্কার বলে দিলাম, শ্রমিকদের সব ব্যাপারে তুমি ঢুকবে না। কথা না শুনলে তোমাকে সরিয়ে দেব। প্রভাত বলেন, ঠিক আছে দিদি। আপনি যা বলবেন, তাই হবে।
এদিন সরকারের বিভিন্ন দফতর ধরে ধরে কী কী কাজ এগিয়েছে, তার খতিয়ান নেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন করেন, ফুড সাপ্লাইজ ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে কেন এত অভিযোগ? রেশন কার্ড আটকে রেখেছেন কেন প্রশ্ন করলেই আপনারা স্পিড পোস্ট কিংবা নাম পরিবর্তনের দোহাই দেন। নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরে কেন ৭২ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে সরকারি আধিকারিকের কাছে জবাব চান মুখ্যমন্ত্রী। সাতদিনের মধ্যে এই সব কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।