বেশ কয়েক মাস ধরেই মিলেছিল আভাস। কান পাতলেই এ কথা শোনা যাচ্ছিল যে, সামনের পুরনির্বাচনে মালদা জেলার দুই পুরসভা ইংরেজবাজার আর পুরাতন মালদা পুরসভায় নাকি জোট গড়ে লড়বে বাম আর কংগ্রেস। ইদানীং আর কোনও রাখঢাক না রেখে সেটা প্রকাশ্যেই বলছেন দুই দলের নেতাকর্মীরা। তবে এই বাম-কংগ্রেস জোটকে পাত্তা দিতে চাইছে না শাসক দল। উল্টে এই জোটের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলনেই গুরুত্ব দিচ্ছে শাসকদল। হাতিয়ার এনআরসি আর সিএএ’র বিরোধিতার পাশাপাশি দুই শহরে হওয়া উন্নয়ন।
বাম-কংগ্রেসের জোট বেঁধে পুরভোট লড়ার বিষয়টিকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব না দিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বলছে, মানুষ কংগ্রেসের শাসনও দেখেছে আবার বামেদের ৩৪ বছরের অপশাসনও দেখেছে। সেখানে তৃণমূলের উন্নয়নও তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন। মানুষ তাই আমাদেরই ভোট দিয়ে জয়ী করবেন। বাম আর কংগ্রেসের জোট বা ঘোঁট সেটা শুধু নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতে।
প্রসঙ্গত, মালদা জেলায় এখন দুটি মাত্র পুরসভা এলাকা আছে। একটি জেলা সদর ইংরেজবাজার, অন্যটি পুরাতন মালদা। দীর্ঘদিন ধরে মহানন্দা নদীর দুই ধারের এই দুই পুরসভা এলাকা এক করে পুরনিগম গঠনের দাবিও রয়েছে আমজনতার। এখন এই দুই পুরসভাতেই ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। আসন্ন পুরনির্বাচনও রাজ্যের শাসক দল একাই লড়বে। ইংরেজবাজার ও মালদা শহরেও তাই হবে। অন্যদিকে, যেহেতু তাঁরা একক ভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে জেতার জায়গা নেই তাই কার্যত মান বাঁচাতে এখন হাতে হাত মিলিয়ে ভোটের ময়দানে মুখ বাঁচাতে নামছে সিপিএম আর কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ মালদা লোকসভা আসন কংগ্রেস ও উত্তর মালদা লোকসভা আসন বিজেপির দখলে গেলেও এই দুই শহর থেকেই লিড তোলে তৃণমূল। আর এখন বিজেপির প্রভাব যে ক্রমশ কমছে আর এনআরসি ও সিএএ’র দৌলতে মানুষ যে তাঁদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে সেটা পরিষ্কার গত বছরের শেষ দিকে হয়ে যাওয়া রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যে ক্রমশ আরও শক্ত হচ্ছে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি।