এনআরসি-সিএএ-এনপিআর নিয়ে প্রথম থেকেই সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি এই ইস্যুতে বেশ কয়েক বার তাঁকে পথে নামতে দেখেছে কলকাতা। পাশাপাশি, জেলায় জেলায় পদযাত্রা করে কেন্দ্রের এই জনবিরোধী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে তৎপর হয়েছেন তিনি। সেই প্রতিবাদের আঁচকে পাহাড়ে ছড়িয়ে দিতেই সিএএ-বিরোধী পদযাত্রা-সহ একগুচ্ছ কর্মসূচী নিয়ে সোমবার ৫ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ সফরের তৃতীয় দিনেই এক বিরাট এনআরসি-সিএএ বিরোধী মিছিলে হাঁটলেন তিনি। পদযাত্রার পর আয়োজন করা হয়েছিল একটি সভারও। আর সেই সভামঞ্চে দাঁড়িয়েই ফের নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূল নেত্রী৷
আজ দার্জিলিঙের জনসভা মঞ্চে মমতা স্পষ্ট বলেন, কাউকে তাড়ানোর আগে আমাকে তাড়াতে হবে৷ কারণ আমি কাউকে তাড়াতে দেব না৷ গতকালই বিরোধীরা দেশবাসীকে ভুল বোঝাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছিলেন অমিত শাহ। এদিন তারই পাল্টা দিতে গিয়ে সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাঠগড়ায় তুলে খোঁচা দেন মমতা৷ বলেন, ‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বড় বড় কথা বলছেন। আমাদের বলছে মিথ্যাবাদী, তা হলে সত্যিটা আপনারা বলুন। দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা। কর্মসংস্থান নেই। ব্যাঙ্কেও টাকা সুরক্ষিত নয়। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাঁর বিরুদ্ধে এজেন্সি লাগিয়ে দিচ্ছে। তাঁকে পাকিস্তানি বানিয়ে দিচ্ছে। পাকিস্তান কী আপনাদের বন্ধু? মহিলাদের কেনও আপনারা সম্মান করেন না? ছাত্র-শিক্ষক আন্দোলন করলেই কেন ওদের ওপর লাঠি দিয়ে মারা হচ্ছে? কিছু বললেই জরুরি অবস্থার ভয় দেখানো হচ্ছে৷’
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, বাংলার ক্ষতি হবে, এমন কিছুই আমরা করতে দেব না৷ এনআরসি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব৷ আমরা কখনই ধর্মের নামে দেশভাগ হতে দেব না৷ একজনকেও দেশ থেকে তাড়াতে দেব না৷ কেউকে তাড়াতে হলে আগে আমাকে তাড়াতে হবে৷ এনপিআর ইস্যুতে তাঁর মন্তব্য, কেউ বাড়িতে গেলে কোন তথ্য দেবেন না৷ বাংলায় কোন ডিটেনশন ক্যাম্প আমরা করতে দেব না৷ কাউকে তাড়ানোর আগে আমাকে তাড়াতে হবে৷ আজ এখান থেকে আমি বলে গেলাম৷ এদিন বিরোধী ঐক্যেও জোর দিতে বলেন মমতা। তাঁর কথায়, বিরোধীদের বলছি, এনপিআরের বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে আমাদের৷ কেন্দ্র এখন অনলাইনের কথা বলছে৷ মোবাইলে নাকি নাগরিকত্ব দেওয়া হবে৷ এর থেকে বড় চিটিংবাজি আর কিছু হতে পারে না৷