তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। জনসাধারণের সামনে তিনি এলে তাঁর কাছে মানুষ প্রশ্ন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি নরেন্দ্র মোদী! তাই তিনি শুধু সেই সব প্রশ্নেরই উত্তর দেন যা কিনা তাঁর পক্ষে যায়। দেশের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে কোনও প্রশ্ন তাঁকে করা হলে তিনি এড়িয়েই যাবেন সেটাই স্বাভাবিক। সোমবার তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে এই ঘটনাই ঘটল!
অনুষ্ঠানে এসে মোদী বলেছিলেন তিনি সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন! কিন্তু এও যে মোদীর জুমলা ছিল তা কে জানত? শৌর্য সুদ। শরীরের বিদ্রোহে হুইলচেয়ারে বন্দি। তবু যন্তরমন্তরে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী মিছিলে শামিল হতে দ্বারকা থেকে এসেছেন দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই স্নাতকোত্তর। মোদী এমনটা বলেছেন শুনে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে শুধু এইটুকুই তো চেয়ে আসছেন জেএনইউ, জামিয়া, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা! তা হলে তাঁদের পুলিশের লাঠি খেতে হল কেন?’’
মান্ডি হাউস থেকে যে প্রতিবাদী পড়ুয়ারা আজ মিছিলে পা মেলালেন, তাঁদের অনেকেরই জিজ্ঞাসা, সত্যিই কি খোলা মনে পড়ুয়াদের সঙ্গে এক বার আলোচনার টেবিলে বসতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি? জানতে চাইতে পারেন না যে, কোন ক্ষোভে এত উত্তাল সমস্ত ক্যাম্পাস? ছাত্র সংগঠন এআইএসএ-র প্রেসিডেন্ট এন সাই বালাজির কটাক্ষ, ‘‘আসলে আগে থেকে ঠিক করে রাখা নির্বিষ প্রশ্নেই একমাত্র স্বচ্ছন্দ প্রধানমন্ত্রী। সত্যিকারের প্রশ্ন তুললে বরাদ্দ থাকবে লাঠিই।’’
সে কথা শুনে প্রতিবাদী ভিড় প্রশ্ন তুলেছে, তা হলে সংবিধান বাঁচাতে যে পড়ুয়ারা নাছোড় লড়াই পণ করেছেন, আওয়াজ তুলেছেন ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থী বাছাইয়ের নতুন নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে, তাঁদের উপরে মোদী সরকার এমন খড়্গহস্ত কেন? কেনই বা প্রযুক্তিতে এমন সড়গড় প্রধানমন্ত্রীর সরকারের অধীনে থাকা দিল্লী পুলিশ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিস্তর সূত্র পেয়েও জেএনইউয়ে তাণ্ডব চালানো এক জনকেও ধরতে পারেনি এত দিনে?