বাম-কংগ্রেসের ডাকা ধর্মঘটকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হল বারাসতে। জায়গায় জায়গায় উদ্ধার হল বোমা। পুলিশের সঙ্গে চলল ধর্মঘটীদের খণ্ডযুদ্ধ। বন্ধ করে দেওয়া হয় অধিকাংশ দোকানপাট। বিপর্যস্ত ট্রেন পরিষেবা।
বুধবার প্রথমে হৃদয়পুর স্টেশনে ট্রেনের নীচ থেকে উদ্ধার হয় তিনটি বোমা। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হাত দিয়েই বোমা সরিয়ে তা নিষ্ক্রিয় করে জিআরপি। এর কিছুক্ষণ পর হেলাবটতলায় রেললাইনের কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি কৌটো বোমা। সেটিকেও নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
এ দিকে, সকাল সকাল রাস্তায় মিছিল বের করেন ধর্মঘটীরা। হাতে পতাকা নিয়ে চলতে থাকে স্লোগান। কেএমসি রোডে রাস্তার ধারের দোকানগুলি জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর ফলে সকাল থেকে অনেক দোকানই ছিল বন্ধ। ধর্মঘটীদের মিছিল বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে পৌঁছলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি আটকাতে গেলে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। তখনই পুলিশের সঙ্গে ধর্মঘটীদের বচসা ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। যশোর রোড ধরে মিছিল এগিয়ে চলে। একটি অটোচালককে বাধা দেওয়া হলে তাঁর সঙ্গে বচসা বাঁধে ধর্মঘটীদের। রাস্তার ধারে পণ্যবাহী ট্রাকগুলিকে জোর করে আটকে রাখা হয়। ধর্মঘটে কেন ট্রাক নিয়ে বেরিয়েছেন, এই প্রশ্নে চালকদের সঙ্গে বচসা বাঁধে ধর্মঘটীদের। অশান্তি হয়েছে মধ্যমগ্রামেও। সেখানে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সঙ্ঘর্ষে জড়ান ধর্মঘটীরা।
ধর্মঘটে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বারাসতে। শিয়ালদা-বনগাঁ শাখায় অবরোধে আটকে পড়েছে বেশ কিছু ট্রেন। রাস্তায় বেসরকারি বাসের সংখ্যাও কম দেখা গিয়েছে। এর ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।
অর্থনীতিতে মন্দা, কর্মসংস্থানের বেহাল দশা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধের প্রতিবাদ এবং সেই সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জির (এনপিআর) বিরোধিতায় বুধবার দেশ জুড়ে ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট পালন করছে বামেদের দশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন। এই বনধকে সমর্থন করেছে কংগ্রেস।
যদিও ধর্মঘট মোকাবিলায় বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। যাত্রী হয়রানি রুখতে অন্যান্য দিনের থেকে এ দিন ২২ শতাংশ বাড়তি বাস পথে নেমেছে বলে জানা গিয়েছে। পরিবহণ দফতর দফতর সূত্রে খবর, যেখানে ৯০০টি রাজ্য সরকারি বাস পথে চলে সেখানে এ দিন ১,১৫০টি বাস। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের তরফে চলবে ৮২৬ বাস। উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম ৬০৫টির বদলে পথে নামাবে ৬৫৫টি বাস।