৯ বছর আগে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনেক আগে থেকেই বাংলার উন্নয়নের জন্য সচেষ্ট ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হ্যাঁ, মমতা যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন ইস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরকে ডানকুনি পর্যন্ত নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেন তিনি। কিন্তু জমি-সহ নানা সমস্যার জন্য এতদিনেও সেই কাজ শুরু করা যায়নি। অবশেষে সেই সমস্যা কাটতে চলেছে।
লুধিয়ানা থেকে ডানকুনি পর্যন্ত ওই ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের মধ্যে ২০৩ কিমি রয়েছে বাংলায়। মূলত হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান জেলার ওপর দিয়ে এই করিডর যাবে। এর জন্য ৭৫ শতাংশ জমির সমস্যা মিটে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই বাকি জমির সমস্যা মিটে যাবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। এছাড়াও ডানকুনিতে একটি টার্মিনাস তৈরির জন্য ৩৬.৫ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই জমি তুলে দেওয়ার জন্য রাজ্য মন্ত্রীসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউপিএ সরকার থাকাকালীন লুধিয়ানা থেকে ডানকুনি পর্যন্ত শুধুমাত্র পণ্যবাহী মালগাড়ি চলাচলের জন্য ১৮৩৯ কিমি ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর করার পরিকল্পনা করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা। এর জন্য ২০০৬ সালে ভারতীয় রেলের অধীনস্থ ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (ডিএফসিসিআইএল) নামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা তৈরি করা হয়।
পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং বাংলায় ওই ফ্রেট করিডর তৈরি করা হবে। এর জন্য পাঞ্জাবে ৮৮ কিমি, হরিয়ানাতে ৭২ কিমি, উত্তরপ্রদেশে ১০৫৮ কিমি, বিহারে ২৩৯ কিমি, ঝাড়খণ্ডে ১৯৬ কিমি আর পশ্চিমবঙ্গে ২০৩ কিমি ব্রডগেজের রেললাইন পাতা হবে। যে লাইন দিয়ে শুধুমাত্র পণ্য নিয়ে মালগাড়ি যাতায়াত করবে।
ইতিমধ্যে লুধিয়ানা থেকে শোননগর পর্যন্ত কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। টেন্ডার ডেকে ঠিকাদারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ শুরু করেছে ভূমি রাজস্ব দফতর।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশ হল, জোর করে জমি নেওয়া হবে না। আলোচনা করে বাজার দরের থেকে কমপক্ষে দেড়গুণ বেশি দামে জমি কেনা হবে। এ জন্য প্রতিটি জেলায় জেলাশাসকদের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি নবান্নে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়, সেখানে ইস্টার্ন ডেডিকেডেট ফ্রেট করিডরের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানেই ভূমি দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতিমধ্যে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ জমি পাওয়া গিয়েছে। তা ডিএফসিসিআইএলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আর বাকি জমির জন্য ব্লকস্তরের ভূমি আধিকারিকরা আলোচনা করছেন। আলোচনার ভিত্তিতে জমি কেনা হবে। খুব শীঘ্রই ৯০ শতাংশ জমি তুলে দেওয়া হবে। এছাড়াও ডানকুনিতে একটি টার্মিনাস তৈরির জন্য ৩৬.৫ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই জমি ডিএফসিসিআইএলকে দেওয়া হবে বলে রাজ্য মন্ত্রীসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।