যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ যেমন থাকছে। তেমনি থাকছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গড় গুজরাতও। কিন্তু সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বাংলা। রাষ্ট্রসঙ্ঘ বিশেষ সম্মান জানালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় প্রকল্প ‘কন্যাশ্রী’ থিমের ট্যাবলো বাদ দিয়ে দিল মোদী সরকার।
নবান্নের পাঠানো আরও দুটি থিমও অনুমোদন দিল না কেন্দ্র। সেগুলি হল, ‘সেভ গ্রিন, স্টে ক্লিন’ এবং ‘জল ধরো জল ভরো।’ তাই রাজ্য প্রবল আগ্রহী হলেও এবার দিল্লীর রাজপথে ২৬ জানুয়ারির প্যারেডে বাংলার ট্যাবলোকে শেষ পর্যন্ত সম্ভবত বাদই দিচ্ছে কেন্দ্র। ট্যাবলো সংক্রান্ত দুটি বৈঠকের পর পশ্চিমবঙ্গ আর ডাকই পায়নি। যা বাদ পড়ারই ইঙ্গিত। আর এই খবরেই তীব্র ক্ষোভ ও উষ্মা প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্তারা।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালেও সাধারণতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোয় বাদ পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী থিম। এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটল। আসলে যারা শেষ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে ডাক পায়, একমাত্র সেইসব রাজ্যের ট্যাবলোই নির্বাচিত হয়। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় আঘাতের অভিযোগ তোলার পাশাপাশি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি ইস্যুতে লাগাতার বিরোধিতার কারণেই কি ট্যাবলো সংক্রান্ত প্রথম দুটি বৈঠকের পর আর ডাক পেল না বাংলা? যদিও এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ কেন্দ্রের।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, আকর্ষণীয় ট্যাবলোর মাধ্যমে সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে কোন রাজ্য প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে তা ঠিক করে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি। কমিটিতে স্থপতি, চিত্রশিল্পী সহ নানা বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা থাকেন। সেখানে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার না করে মূলত সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিশেষত্বর ওপর জোর দেওয়া হয়। কিন্তু তা-ও কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পকেও গুরুত্ব না দেওয়ায় রাজ্য সরকার হতবাক।
উল্লেখ্য, গতবার থিম ছিল, মহাত্মা গান্ধীর জন্ম সার্ধশতর্ষ। অংশ নিয়েছিল বাংলা। কিন্তু এবার কোনও নির্দিষ্ট থিম ছিল না। রাজ্যগুলিকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সেই মতো থিম পেশ করে স্থান পেয়েছে উত্তরপ্রদেশ, অসম, গুজরাত, কর্ণাটক, গোয়ার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্য। এছাড়া রয়েছে মহারাষ্ট্র, মেঘালয়। স্থান পেয়েছে উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানার মতো বিজেপির প্রতি তুলনামূলক নরম মনোভাবাপন্ন রাজ্যগুলি।
তবে মমতার বাংলার মতোই বাদ পড়েছে কেজরিওয়ালের দিল্লী, সিপিএমের কেরালাও। এই রাজ্যগুলিতেও সিএএ-বিরোধী আন্দোলন নিয়ে উত্তাল। তাই মনে করা হচ্ছে মোদী সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণেই বাদ পড়ল বাংলা।