সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে গোটা দেশ। এনআরসি-সিএএ-র প্রতিবাদে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ আন্দোলন করছে তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। শুধু তাই নয়। মোদী সরকারের কাছে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার সামিল হয়েছে এনডিএ শরিকদের উল্টো সুর গাওয়া। এনআরসি-সিএএ ইস্যুতে বিজেপির পাশে নেই প্রথমসারির গুরুত্বপূর্ণ একজন জোটসঙ্গীও। এই পরিস্থিতিতে গতকালই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনে করার কথা ভাবছে কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েকটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা সিএএ বাস্তবায়িত করবেন না। গতকাল সিএএ বাতিলের প্রস্তাব পাশ হয়েছে কেরালার বিধানসভায়। বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘সংবিধানের আদর্শের সঙ্গে এই আইনের সংঘাত হচ্ছে। কেন্দ্রের উচিত ধর্মনিরপেক্ষতার স্বার্থে এই আইন প্রত্যাহার করা।’ মমতাও টুইটে বলেন, ‘অসাংবিধানিক সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআরের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করছেন, তাঁদের সেলাম। ভারতকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বাংলাও ঐক্যবদ্ধ।’ কিন্তু তারপরেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘কোনও রাজ্য আইনসভার এক্তিয়ার নেই নাগরিকত্ব নিয়ে আইন পাশ করানোর।’
বর্তমান আইন অনুযায়ী, জেলাশাসকের মাধ্যমে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, ‘নাগরিকত্বের জন্য আবেদন, তথ্য যাচাই এবং নাগরিকত্ব প্রদান— পুরো বিষয়টিই অনলাইনে করার চিন্তাভাবনা চলছে। ভাবা হচ্ছে, জেলাশাসকের পরিবর্তে বিষয়টি দেখভালের জন্য নতুন কর্তৃপক্ষ তৈরি করা হবে।’ উল্লেখ্য, সিএএ-র বাস্তবায়ন নিয়ে কয়েকটি রাজ্যের বিরোধিতা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘জানতাম, বিরোধিতা হবে। আইন কী ভাবে প্রয়োগ করতে হবে, জানি।’ অনেকেই মনে করছেন, এই অনলাইন পরিকল্পনারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অমিত। তাঁর মন্ত্রক বরাবরই বলছে, প্রতিরক্ষা, বিদেশ, নাগরিকত্ব-সহ কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত বিষয়ে এক্তিয়ার নেই রাজ্যের।