দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিক আইন ও নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির ব্যাপক প্রতিবাদ আন্দোলন চলছেই। কিন্তু, সরকারের কপালে ভাঁজ ফেলেছে এনডিএ শরিকরাই। শুক্রবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)–এর প্রধান নীতীশ কুমার স্পষ্ট বলেছেন, বিহারে এনআরসি হবে না। নীতীশ বিজেপি–র সঙ্গে জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নীতীশ বলেছেন, কীসের এনআরসি? আর তা বিহারে কেন করা হবে? পাটনায় ‘ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেস’–এর এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন তিনি।
সংসদের দুই কক্ষেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব) সমর্থন করেছে নীতীশের দল। কিন্তু, দলের হুইপ মেনে সরকারের পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য হলেও দলের একাধিক নেতা নিজেদের ক্ষোভ চেপে রাখেননি। সংসদ চত্বরেই দলের সাংসদরা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি ইস্যুগুলিতে সমর্থন দেওয়ার আগে নীতীশকে ভেবে দেখার আবেদন করেছিলেন। এছাড়া দলের সহ–সভাপতি প্রশান্ত কিশোর তাঁর বিরুদ্ধে গলা চড়িয়েছেন। এমনকী, এই ইস্যুতে নীতীশের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি।
নীতীশের আগে বিরোধী–শাসিত ৫টি রাজ্য স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছে, তারা নিজেদের রাজ্যে এনআরসি চালু করবে না। তৃণমূল–শাসিত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস–শাসিত পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল এবং সিপিএম–শাসিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নরা সমস্বরে এনআরসি–তে না করেছেন। বিরোধী শিবিরে না থাকলেও মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী বিজু জনতা দলের প্রধান তথা ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কও তাঁর রাজ্যে এনআরসি চালু করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
এনডিএ–র পুরনো শরিক শিরোমণি অকালি দলের এক নেতা এদিন বলেছেন, ‘আমরা সংসদে নাগরিকত্ব বিলে সমর্থন দিয়েছি। কিন্তু, দেশজুড়ে এনআরসি চালু মেনে নেব না।’ আর এক শরিক অসম গণপরিষদও সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনীর পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু, এক সপ্তাহ পার না হতেই দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, ‘অসমে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালুর চেষ্টা করা হলে এনডিএ–তে থাকা কঠিন হবে।’ দলের নেতারা রাজ্যপাল জগদীশ মুখীর সঙ্গে দেখা করে আইন চালু না করার আর্জি জানিয়েছেন। নেতারা বলছেন, ‘অসমে এই আইন চালুর বিরোধিতা করা হচ্ছে। নাগরিকত্ব আইনে অসমের কোনও সুবিধা হবে না। বরং এই আইনের ফলে রাজ্যের নিজস্ব পরিচয়, সংস্কৃতি, ভাষা ও আদিবাসীদের ওপর কুপ্রভাব পড়বে।’