সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বৈধতা বিচারের জন্য বৃহস্পতিবার গণভোটের দাবি করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মন্তব্যের পর রাজ্যপাল থেকে শুরু করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি প্রত্যেকেই মমতাকে তোপ দাগেন। মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টা পর তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে ব্যাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন দলের সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে এনআরসি- সিএএ বিরোধী কর্মসূচি নিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন মমতা। বলেন, ‘আমি নিরপেক্ষ সংস্থার দ্বারা গণভোট করানোর কথা বলেছি। উদাহরণ হিসাবে রাষ্ট্রসংঘের উল্লেখ করেছি। রাষ্ট্রসংঘের তত্বাবধানে গণভোটের কথা বলিনি। আমি চাই নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে গণভোট করা হোক।’ এরপর কেন্দ্র ও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘গায়ের জোর না দেখিয়ে, জেদাজেদি না করে মানুষের স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনকে মেনে নিন। প্রধানমন্ত্রী কে বলব, দয়া করে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।’
বিজেপিকেও এদিন তুলোধোনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গণভোট মন্তব্য নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, মমতা পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন। তারই পালটা মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৮০ সালের একটা দলের কাছ থেকে আমাকে সার্টিফিকেট নিতে হবে না।’ এদিন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী একগুচ্ছ কর্মসূচির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে আমরা বনধ রাজনীতির বিরুদ্ধে। এটা আমরা সমর্থন করি না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে জনজীবন চালু রেখে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করব।’ তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবসকে নাগরিক দিবস হিসাবে পালন করা হবে। তার আগে ২৮ ডিসেম্বর রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সকাল দশটায় মিছিল শুরু হবে।
২৭ ডিসেম্বর সিঙ্গুর থেকে তারকেশ্বর কৃষকদের মিছিল হবে। ২৪ ডিসেম্বর আইএনটিটিইউসির মিছিল হবে। ২৫ ডিসেম্বর রাজ্যজুড়ে এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি। প্রত্যেকটি ব্লক, মহকুমায় প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে। ২৩ ডিসেম্বর ‘নো এনআরসি- নো সিএএ’কর্মসূচি করবে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন এনআরসি- সিএএ বিরোধী আন্দোলন রাজ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে সবকিছুই হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণভাবে।