বিরোধীদের হাজারো বিরোধিতা সত্ত্বেও গত সপ্তাহেই সংসদের দুই কক্ষে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব) পাশ করিয়ে নেয় মোদী সরকার। আর তারপর থেকেই আগুন জ্বলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, মূলত আসামে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের(সিএএ) প্রতিবাদে এখনও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে গোটা আসাম জুড়েই। সোমবার অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (আসু)-এর মুখ্য উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ-সহ শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। ইন্টারনেট পরিষেবাও মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়াকে অপব্যবহার করে রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা ব্যাহত করার চেষ্টা হতে পারে। তাই ইন্টারনেট পরিষেবা আরও ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিগত কয়েকদিন ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এর জেরে আগাম কর দাখিলের তৃতীয় কিস্তি জমা দিতে অনেকেই সমস্যার মুখে পড়েছিলেন। তাই, কর দাখিলের শেষ দিন পিছিয়ে দিল সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্স। ১৫ ডিসেম্বরের বদলে এর সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সিএএ-র প্রতিবাদে সোমবার থেকে তিনদিন ব্যাপী সত্যাগ্রহের ডাক দিয়েছে আসু। গতকাল সকালে লতাশীল মাঠে এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয়। বক্তব্য রাখেন সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য-সহ অন্যান্যরা। সিএএ-এর প্রতিবাদের পাশাপাশি, বিক্ষোভকারীদের অহিংসভাবে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আর্জি জানান তাঁরা। সভার পর ডেপুটি কমিশনারের দফতরের উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিল দিঘালিপুখুরি এলাকায় পৌঁছতেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আটক করে। এরপর, দিঘালিপুখুরির কাছের একটি মাঠের অস্থায়ী জেলে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় উত্তাল হওয়ার পর শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অসমে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় দু’-একদিনের মধ্যেই জওয়ানদের ফিরিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতীয় সেনার পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল চৌহান। তিনি জানান, শনিবার পর্যন্ত উজানে ২৪ এবং নিম্ন অসমে ১২ কলম বাহিনী ছিল। কিন্তু, মাত্র ৮ কলম বাহিনী ফ্ল্যাগ মার্চ করেছে। এর অর্থ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। তাই, আগামী দু’-একদিনের মধ্যে বাহিনীকে ব্যারাকে ফেরানো হবে বলে আশা করা যায়।