নোটবন্দীর পর ফি বছর দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রে গড়ে ৩-৪ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। গত নভেম্বরেই তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে তথ্য-সহ একথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী সন্তোষ কুমার গাঙ্গোয়ার। কেন্দ্রীয় রিপোর্টে এ-ও উঠে এসেছিল যে, নোটবন্দীর পরে ২০১৭-১৮ সালে ভারতে বেকারত্ব দাঁড়িয়েছে চার দশকে সব থেকে বেশি। পাশাপাশি, বিভিন্ন উপদেষ্টা সংস্থার সমীক্ষাতেও ধরা পড়ে কর্মসংস্থানের বিবর্ণ ছবি। চাহিদার অভাবে ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতিকেই যার জন্য দায়ী করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। অথচ সোমবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই গঙ্গোয়ারই বললেন, কর্মসংস্থান কমার মতো কিছুই ঘটেনি কোথাও! যা শুনে কার্যত অবাক গোটা দেশ। অনেকেরই প্রশ্ন, এই তথ্য কোথা থেকে পেলেন তিনি? তবে কি সরকারি তথ্যকেও অস্বীকার করছেন শ্রমমন্ত্রী? যদিও কর্মসংস্থান হোঁচট না খাওয়ার যুক্তি খাড়া করলেও, তাঁর সাপেক্ষে কোনও তথ্য দিতে পারেননি গঙ্গোয়ার।
গতকাল অবশ্য ‘বিস্ময়ের’ কারণ ছিল আরও। রাজ্যসভায় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়ালের দাবি, এই মুহূর্তে গাড়ি শিল্পে চাকরি নিয়ে সঙ্কট নেই। অথচ একের পর এক পরিসংখ্যানে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে, দীর্ঘ এক বছর ধরে নাগাড়ে গাড়ি বিক্রি কমছে। শো-রুম বন্ধ করেছে বহু ডিলার। গাড়ি তৈরি কমিয়েছে বেশির ভাগ সংস্থা। ধাক্কা খেয়েছে যন্ত্রাংশ তৈরির শিল্পও। যার জেরে সব মিলিয়ে প্রায় ৩.৫ লক্ষ কর্মীর চাকরি গিয়েছে। খোদ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণও গাড়ি শিল্পের সংকটের কথা স্বীকার করে নিয়ে সেই দায় দেশের ‘মিলেনিয়াল’দের ঘাড়ে চাপিয়েছিলেন। অথচ রাজ্যসভায় মেঘওয়ালের দাবি, এই শিল্পে চাকরি হারানো নিয়ে ভয়ের কারণ নেই। তাঁর কথায়, ‘গাড়ি সংস্থাগুলি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এপ্রিল থেকে সব গাড়ি বিএস-৬ দূষণ মাপকাঠির হবে। যে উদ্বেগের (চাকরি যাওয়ার) কথা বলা হচ্ছে, তা ওই পরিবর্তনেরই অঙ্গ।’ ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর আবার জানান, তিন বছরে গাড়ি বা তার যন্ত্রাংশের কোনও কারখানা বন্ধ হয়নি!