আদালত যাওয়ার পথেই গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল দোষীরা। সেখানেই দেহের ৭০% পুড়ে গিয়েছিল। বাঁচানোর জন্য উন্নাও থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল দিল্লীর একটি নার্সিংহোমেও। কিন্তু চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী, শেষ অবধি হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যু হয় উন্নাও ধর্ষণকান্ডের সেই নির্যাতিতার। এবার তাঁর পরিবার ফুঁসে উঠল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ওপর। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাড়িতে আসুন ও ন্যায়বিচার দিন। নইলে শেষকৃত্য হবে না। উন্নাওয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত নির্যাতিতার পরিবার এবার এই দাবিতে এককাট্টা হল। তাঁদের জোরদার দাবি, যতক্ষণ না যোগী আদিত্যনাথ গ্রামে পৌঁছবেন, ততক্ষণ দেহ ওভাবেই শায়িত থাকবে।
ধর্ষণের পর বিচার চেয়ে মামলা এবং সেই মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে অভিযুক্তদের হাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রায় চারদিন লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয় উন্নাওয়ের তেইশ বছরের তরুণীর। শনিবার ভোরবেলা হাসপাতালের বিছানায় সমস্ত লড়াইয়ের কাছে হার মেনেছিলেন তিনি। তাঁর ৯০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ, নিথর দেহ যখন উন্নাওয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছল, তখন প্রায় ২১ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে স্বজনরা হাতে পেলেন ঘরের মেয়ের দেহ। নিয়মমতো সৎকার হওয়ার কথা রবিবার। কিন্তু দিনের শুরুতেই কার্যত শেষকৃত্য করতে বেঁকে বসেন আত্মীয়-পরিজনরা। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গ্রামের বাড়িতে গিয়ে একবার দেখুন, তাঁদের মেয়ের কী অবস্থা। ততক্ষণ পর্যন্ত দেহ সৎকার করা হবে না।
এমন নৃশংস ঘটনার পর যদিও ‘ব্যথিত’ বলে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে দ্রুত এর বিচার হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর কথা মোটেই ভরসা জোগাচ্ছে না নির্যাতিতার পরিবারকে। আশঙ্কা একটাই, যে অভিযুক্তরা সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথেই প্রমাণ লোপাটের জন্য নির্যাতিতার উপর এমন হামলা চালাতে পারে, তাঁদের আক্রোশ কি এত তাড়াতাড়ি মিটে গিয়ে মনে ভীতির সঞ্চার হবে? নাকি আরও বড় আঘাতের জন্য নিজেদের গোপনে প্রস্তুত করবে? বিচার শেষ হওয়ার আগেই যদি তাঁদের উপর আরও বড় আঘাত নেমে আসে, এই আশঙ্কায় কাঁটা নির্যাতিতার পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে তাঁদের আশ্বাস দিলে, হয়ত বা সেই আশঙ্কার মেঘ কিছুটা হলেও কাটবে।