মহারাষ্ট্রের ‘মহা’-নাটকের যবনিকা পতনের পরই শুরু হয়েছে নতুন জোট সরকারের নয়া যাত্রা। আগামী পাঁচ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে। মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পেয়েছেন এনসিপি-কংগ্রেসের বিধায়করা। এই সরকারের যাত্রা শুরুর আগেই মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের সাধারণ মানুষের জন্য প্রকাশ করেছে কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম। তিন দলের এই জোট মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাডী আগামী ৫ বছরের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ সরকার উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷ সবচেয়ে বড় চমক এই কমন মিনিমাম প্রোগ্রামে উল্লেখ রয়েছে, স্থানীয়দের জন্য বেসরকারি ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ, ১০ টাকার ভরপেট খাবার দেওয়া হবে৷ মুম্বইয়ের আরে কলোনিতে মেট্রো রেলের কার শেড তৈরি জন্যে ২ হাজার ৬৪৬টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বৃহন্মুম্বই পুরসভা। এক সপ্তাহ ধরে আলোচনার পর এই সরকার সংবিধান অনুযায়ী ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷
মুম্বইতে এই ডকুমেন্ট প্রকাশের সময় জোটের নেতারা বলেন, ধর্ম, জাত ও ভাষার ভিত্তিতে মানুষে মানুষে বিভেদ করবে না সরকার৷ কৃষি ঋণ মুকুবের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে৷ বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীনে দরিদ্রদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে৷ ২টি কর্ডিনেশন কমিটি থাকবে৷ এক সরকারের, দুই জোটের পক্ষে৷ এরা সরকার ও জোটের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করবে৷ তিন দলের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্রকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য৷ যাঁদের কণ্ঠস্বর শোনা যায় না তাঁদেরও উন্নয়নে শামিল করতে হবে৷ ধর্ম, সামাজিক অবস্থান, অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক মদত – এসব না দেখে যে কেউ উন্নয়নের স্বাদ পেতে পারেন৷
এই ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছেন শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে, এনসিপি-র জয়ন্ত পাটিল, কংগ্রেসের বালাসাহেব খোরাট৷ রং সারদা হোটেলে এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন এনসিপির মুখপাত্র নওয়াব মালিক৷ কমন মিনিমাম প্রোগ্রামে বলা হয়েছে বেসরকারি চাকরি ক্ষেত্রে স্থানীয়দের ৮০ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া হবে৷ শিন্ডে বলেন, যাঁদের বাসস্থান সার্টিফিকেট থাকবে, অর্থাৎ যাঁরা ১৫ বছর এখানে আছেন, তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন৷ এখানে আরও বলা হয়েছে, প্রতি তালুকায় ১ টাকায় চিকিৎসা ও নাগরিকদের স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ দেওয়া হবে৷ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মহিলাদের বিনা মূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে৷ কৃষি এই ডকুমেন্টের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক৷ উদ্ধব সরকারের নীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া অনেক নীতিরই প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।