শহর সেজে উঠেছে গোলাপি আলোয়। আগামীকাল থেকে শুরু সেই বহু প্রতীক্ষিত ইডেনে গোলাপি বলের ঐতিহাসিক দিনরাতের টেস্ট। চলছে একেবারে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। একের পর এক চমক দিচ্ছেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ। এবার জানা গেল, সংবর্ধনা সভার আগে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন রুনা লায়লা।
সূত্রের খবর, প্রথম দিনের খেলা শেষে ভারত ও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সম্মানিত করা হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষ ভাবে সম্মানিত করা হবে। তিনি বক্তব্যও রাখবেন। সৌরভ জানিয়েছেন, সংবর্ধনা সভার আগে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন রুনা লায়লা। সিএবি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের এই সঙ্গীতশিল্পী দু’টি বাংলা ও একটি হিন্দি গান গাইবেন। এ পার বাংলার সুরকার ও গায়ক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।
শুধু তাই নয়, ভারত-বাংলাদেশ দিন-রাতের ‘গোলাপি’ টেস্টের প্রথমদিন অর্থাৎ শুক্রবার টি-ব্রেকের সময় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন সৌম্যজিৎ দাস। সঙ্গে থাকবেন অবশ্যই সৌরেন্দ্র এবং আরও কয়েকজন। সন্ধ্যা ৫-৪০ থেকে ১৫ মিনিটের সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান। । কবিগুরুর ‘একলা চল রে’ দিয়ে যাত্রা শুরু গানের ভেলার। তারপর সত্যজিৎ রায়ের ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে’। অবলীলায় একটি থেকে অন্য গানে কণ্ঠার্পণ সেই তরুণের। অনবদ্য যন্ত্রানুষঙ্গ। ক্রিকেটের নন্দনকাননে দুই বাংলার মিলনসেতুতে সঙ্গীত। মোলায়েম স্বরে রাগ-রাগিনীর ওঠা-নামা। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বন্দে মাতরম’ হয়ে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’…। সাবেকিয়ানার সাথে মিলেমিশে যাবে ফিউশন।
সৌম্যজিৎবললেন, ‘দাদার মগজ থেকেই এই পরিকল্পনা বেরিয়েছে। ওঁর পরামর্শেই অনুষ্ঠানে ভারতীয় রাগসঙ্গীত বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। এই সুযোগ পেয়ে আমরা আপ্লুত। ১৫ মিনিটের অনুষ্ঠানকে দু’ভাগে ভাগ করেছি। প্রথম পর্বের নাম দিয়েছি বাংলার গর্ব। এখানে থাকবে কবিগুরু, সত্যজিৎ রায়, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অমর সৃষ্টির এক কোলাজ। প্রতিটি গানের আন্তর্জাতিক আবেদন যথেষ্ট। আর দ্বিতীয় পর্বে ভারতের ঐক্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ভৈরব রাগের আলাপের মধ্যে দিয়ে ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’ পরিবেশন করব আমরা। নয়ের দশকে দূরদর্শনে এই গান প্রত্যেকের হৃদয় স্পর্শ করেছিল। দেশের বিভিন্ন ভাষা ব্যবহার করায় যার জনপ্রিয়তা এখনও অটুট। সবশেষে থাকবে ‘জয় হো’ এবং উপনিষদের শান্তি মন্ত্র।’
কানায় কানায় পূর্ণ ইডেন গার্ডেন্সে সঙ্গীত পরিবেশন করার জন্য মুখিয়ে আছেন সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ। এই প্রসঙ্গে তাঁদের প্রতিক্রিয়া, ‘দাদার দেওয়া এই সুযোগ অবশ্যই কাজে লাগাব। আশা করি, বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকদেরও ভালো লাগবে এই অনুষ্ঠান। এছাড়া ক্রিকেটাররা তো রয়েইছেন। খেলার মধ্যে গানের বিরতি যেন বিরাট কোহলি-মুশফিকুরদের উদ্দীপ্ত করতে পারে, সেই চেষ্টাই করব।’
বুধবার সকালেই বাংলাদেশের উপদূতাবাসের তরফে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত চূড়ান্ত ব্যবস্থা দেখতে ইডেন পরিদর্শন করে যায় বিশেষ দল। গোলাপি বলে ভারতের প্রথম দিনরাতের টেস্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে ইডেন ও গোটা কলকাতা। শহিদ মিনার এবং সিএবি সংলগ্ন বহুতলগুলি সেজে উঠেছে গোলাপি আলোয়। গঙ্গায় ভেসে বেড়াচ্ছে গোলাপি আলো দিয়ে সাজানো লঞ্চ। ঝলমল করছে শহরের উদ্যানগুলিও। সিএবির এক কর্তা বলছেন, ‘‘উপমহাদেশের প্রথম গোলাপি আলোর টেস্ট ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখতে চাই আমরা। তার জন্য আয়োজনে কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছি না।’’