উপত্যকা থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর থেকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি কি রকম তা নিয়ে দেশ তথা বিশ্ববাসীর কাছে উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু বাস্তবে কাশ্মীরের চিত্র সুখকর নয়। সীমান্তে জঙ্গি অনুপ্রবেশের পাশাপাশি যে ভাবে কাশ্মীরের স্থানীয় যুবকেরা সাম্প্রতিক সময়ে অস্ত্র তুলে নিতে শুরু করেছে তাতে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। পুলওয়ামা থেকে হালের কুলগাম, প্রতিটি হামলায় স্থানীয় যুবকেরা জড়িত আছে বলে দাবি পুলিশের।
এ দিনও ব্যাঙ্ককে প্রবাসী ভারতীয়দের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাই ছিল সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতা ছড়ানোর মূল কারণ। আজ কাজ শুরু করেছেন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল জি সি মুর্মু। কিন্তু বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে সেনা-আধাসেনার বাড়তি বাহিনী থাকা সত্ত্বেও জঙ্গি হামলায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন।
প্রশ্ন উঠেছে, ফের কি কঠিন হতে শুরু করেছে কাশ্মীরের পরিস্থিতি? জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ ও তিন মাসের টানা নিষেধাজ্ঞা ফের সেই পরিস্থিতিকেই দ্রুত ফিরিয়ে আনছে বলে আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে উপত্যকা জুড়ে প্রচার শুরু হয়েছে, কাশ্মীরিয়ত ও ইসলাম বিপন্ন। গোয়েন্দাদের দাবি, এমন ভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে যেন কাশ্মীরিদের অস্তিত্বের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। লাগাতার ওই প্রচারে প্রভাবিত হতে শুরু করেছেন আমকাশ্মীরিও। বিশেষত যুবকেরা। পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বরাবর চেয়ে এসেছে, কাশ্মীরের স্থানীয় যুবকেরাই যাতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়।
গোয়েন্দাদের কাছে আশঙ্কার বিষয় হল, এই মুহূর্তে গোটা উপত্যকার জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বয়স ৩০-এর কম। তাদের কোনও স্থায়ী রোজগার নেই। জঙ্গি দলে নাম লেখালে এক দিকে আয়ের উৎস তৈরি হয়। অন্য দিকে বুরহান ওয়ানির মতো জঙ্গিরা এখন কাশ্মীরি যুবকদের কাছে রোল মডেল। এক স্বরাষ্ট্র কর্তার আক্ষেপ, ‘‘দুর্ভাগ্য যে বুরহান বা জাকির মুসাই হল কাশ্মীরের যুবকদের রোল মডেল। পাল্টা কোনও রোল মডেল আমরা খাড়া করতে পারিনি।’’