সারা দেশে চলছে অর্থনৈতিক মন্দার বাজার। গাড়ি বাজারে নেমেছে বিরাট ধ্বস। জিডিপির নিরিখে বিশ্ববাজারেও পিছিয়ে পড়েছে ভারত। প্রায় দিন শেয়ারের বাজারের সূচক নিম্নগামী। দেশের শেয়ার বাজারের ক্রমশ পতন, ভারি-মাঝারি থেকে হালকা শিল্পে মন্দা। উৎপাদন কমে গিয়েছে। চা, গাড়ি, তামাক–সহ একাধিক শিল্প ধুঁকছে। কিন্তু এই পরিস্থিতির কোনো উন্নতির চিহ্ন এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা আইএমএফ–ও সতর্ক করেছে ভারতের পতনোন্মুখ অর্থনীতি সম্পর্কে। এমনকি মোদিঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি মুকেশ আম্বানিও সম্প্রতি স্বীকার করে নিয়েছেন দেশের ‘বর্তমান অর্থনীতি একটু ঝিমিয়ে পড়েছে’। এর মধ্যে দাঁড়িয়েও ক্রমাগত বড়াই করেই চলেছে বিজেপি সরকার।
সেই পথে হেঁটেই রবিবার ব্যাংককে আয়োজিত ১৬তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ড গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফের দাম্ভিক ঘোষণা, ‘বিনিয়োগ এবং সহজে ব্যবসা করার জন্য ভারতে আসুন। নতুন ব্যবসা শুরুর জন্যও ভারতে আসুন। সেরা পর্যটনকেন্দ্র দেখতে হলে ভারতে আসুন। ভারত সবসময় দুহাত বাড়িয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। বিনিয়োগের জন্য অন্যতম সেরা অর্থনীতি ভারত।’ ব্যাংককে একটি ভারতীয় শিল্প সংস্থার ৫০তম বর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একথা বলেছেন মোদী।
তাঁর সদর্প ঘোষণা, ‘ভারত এখন পাঁচ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ। যখন আমার সরকার ২০১৪–য় ক্ষমতায় এসেছিল তখন ভারতের জিডিপি ছিল দুই ট্রিলিয়ন ডলার। গত ৬৫ বছরে দুই ট্রিলিয়ন। অথচ গত পাঁচ বছরে আমরা তা বাড়িয়েছি প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ডলার। গত পাঁচ বছরে ভারত ২৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ বা এফডিআই পেয়েছে। যা গত ২০ বছরে পাওয়া এফডিআই–এর প্রায় অর্ধেক। আমরা প্রথম ১০টি এফডিআই গন্তব্যে রয়েছি। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসার সুযোগ তালিকায় আমরা এখন ৭৯তম স্থানে।’
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে মোদী ঘোষণা করেন, ‘আমি পূ্র্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছি এটাই দেশের সেরা সময়। ভারত সমৃদ্ধ হলেই বিশ্ব সমৃদ্ধ হবে। আমাদের লক্ষ্য ভারতের উন্নয়ন এই গ্রহের নেতৃত্ব দেবে।’ কিন্তু যতই মোদী মুক্ত বাণিজ্য নীতি কিংবা বিনিয়োগের আহ্বান থাকুক, বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। জিডিপির নিরিখে ভারতের স্থান নেমেছে, বেড়েছে বেকারত্ব, বন্ধ হয়েছে একাধিক সংস্থা। সব মিলিয়ে ভারতীয় অর্থনীতির বেহাল দশায় ক্ষত-বিক্ষত সরকার।