অন্য গোল শিকারি ফরোয়ার্ডদের মতো তিনি বিপক্ষ পেনাল্টি বক্সে বলের জন্য অপেক্ষা করা একেবারেই পছন্দ করেন না তিনি। এদিন তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ঠিক চিরাচরিত গোল স্কোরারদের মতো নই। আমার ভাল লাগে একটু নীচ থেকে খেলতে। যাতে অনেক আগে থেকেই বলের সঙ্গে আমার পায়ের সংযোগটা তৈরি হয়। সব সময় লক্ষ্য থাকে, অন্যদের বা নিজের জন্য গোলের সুযোগ তৈরি করার। সুযোগের জন্য অপেক্ষা করা নয়।’’
মেসি অবশ্য স্বীকার করেছেন, ফুটবল জীবনের শুরু থেকেই তাঁর এই ধরনের মানসিকতা ছিল না। এটা হয়েছে অনেক দিন ধরে খেলতে খেলতে। বার্সেলোনার কিংবদন্তি তারকার কথায়, ‘‘এখন অনেক আগে বল ধরে বিপক্ষ বক্সে এসে গোল করে যেতে বা করাতে বেশি ভাল লাগে। তবে শুধু গোল করার জন্য আমি ফুটবলটা খেলি না। শুরুতে যখন খেলতাম, তখন কিন্তু আমার ঠিক এই ধরনের মানসিকতা ছিল না। অনেক দিন ধরে খেলতে খেলতে নিজের মধ্যে একটা নিয়ন্ত্রণের মানসিকতা আনতে পেরেছি। যে কারণে যে কোনও ম্যাচেই আমি এখন মোক্ষম সময়ের অপেক্ষায় থাকতে পারি। দরকার হলে সেই মুহূর্ত তৈরিও করতে পারি।’’
এখানেই থামেননি লিও। তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘একটা সময় ছিল, যখন নিজের বা দলের জন্য সুযোগ তৈরির কাজটা আমি একেবারেই করতাম না। তখন শুধুই নিশ্চিত পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করে বল পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়তাম। কিন্তু এখন আমি অনেক পরিণত। একটা ম্যাচের চরিত্র আগের থেকে অনেক ভাল বুঝি। ভাল করেই বুঝতে পারি কখন আমাকে মাঠে নেমে আসল কাজটা করার চেষ্টা করতে হবে।’’
এই সাক্ষাৎকারে মেসি স্পেনের ফুটবল আর দক্ষিণ আমেরিকার বিশেষ করে আর্জেন্টিনার ফুটবলের মূল পার্থক্যের কথাও বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্পেনে একটা ম্যাচ হেরে গেলে কিছুই প্রায় হয় না। ম্যাচ শেষ হলেই সবাই সব কিছু ভুলে যায়। কিন্তু আর্জেন্টিনায় কোনও ম্যাচে হারলে আপনি বাড়ি থেকেই বেরোতে পারবেন না। আমার দেশে এবং দক্ষিণ আমেরিকায় ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা অনেক বেশি। সেটা দক্ষিণ আমেরিকার সব দেশের জাতীয় দলের ক্ষেত্রেও অনেকাংশে সত্যি। ওরা আপনাকে ঘুমোতে দেবে না। দরকার হলে, হোটেলে আপনার দিকে যা পাবে তা-ই ছুড়ে মারবে।’’
একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দেখা সেরা স্ট্রাইকার প্রাক্তন ব্রাজিল তারকা রোনাল্ডো লুইস নাজারিয়ো দে লিমা। তিনি বলেছেন, ‘‘রোনাল্ডো এক অলৌকিক প্রকৃতির ফুটবলার। এখনও পর্যন্ত যত স্ট্রাইকার দেখেছি, তাঁদের মধ্যে আমার চোখে সেরা রোনাল্ডো। ওর ফুটবলই ছিল অবিশ্বাস্য প্রকৃতির।’’ যদিও তিনি নাম করছেন আর এক প্রাক্তন ব্রাজিলীয় তারকা রোনাল্ডিনহোরও। তিনি বলেছেন, ‘‘বার্সেলোনায় আসার পরে অনেক কিছু শিখেছি ওর থেকে। নতুন ফুটবলার হিসেবে আমি ড্রেসিংরুমে চুপচাপ থাকতাম। কিন্তু রোনাল্ডিনহো আমার যাবতীয় অস্বস্তি কাটিয়ে দিয়েছিল। আমাকে বার্সেলোনায় কড়া নজরে ওই রাখতো।”