তিলোত্তমায় দীপাবলির সন্ধে থেকেই শব্দদূষণ বা ডেসিবেল মাপার যন্ত্র নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। মাইকে চলছিল লাগাতার প্রচার। রাস্তায় টানা টহল চলছিল পুলিশবাহিনীর গাড়ি আর বাইকের। কোনও এলাকা থেকে শব্দবাজির আওয়াজ শোনা গেলে অথবা অভিযোগ এলেই আধিকারিকরা ছুটে যাচ্ছিলেন সেখানে। তার উপর সন্ধে থেকেই সিসিটিভির মনিটরের উপর চোখ পুলিশ আধিকারিকদের।
কলকাতায় শব্দবাজির তাণ্ডব রুখতে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রত্যেক থানার ওসি ও পুলিশকর্তাদের কড়া নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ মেনেই এদিন সন্ধের আগেই রাস্তায় নেমে পড়েছিল বাহিনী। রাস্তায় ছিলেন পুলিশকর্তারাও। কালীপুজোর নিরাপত্তায় ছিল অতিরিক্ত পাঁচ হাজার পুলিশ। এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ, সন্ধে আটটার আগে বা রাত দশটার পর যেন আতসবাজি পোড়ানো না হয়। একসঙ্গে শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ রোখাই কলকাতা পুলিশের কাছে ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। তাতেই সফল কলকাতা পুলিশের বাহিনী।
এদিন রাস্তাগুলির উপর কড়া নজরদারি ছিল পুলিশের। কাউকে শব্দবাজি ফাটাতে দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধরে ফেলা বা কেউ ফাটাতে গেলে তাকে দেখলে শব্দবাজি ফাটাতে মানা করা, এইভাবেই কালীপুজোর রাতে কলকাতা ও তার আশপাশের জেলা এবং কমিশনারেটগুলিতে শব্দদানবকে জব্দ করতে সফল হল পুলিশ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বায়ুর দূষণ গতবারের থেকে অনেক কম ছিল।
গতবার যেখানে দূষণের সূচক ২৫০ ছিল, এবার সেখানে সূচক ১০০ থেকে ১৫০ মধ্যে ছিল। রবিবার রাত পর্যন্ত পুলিশের হাতে ৭৫২ জন ধরা পড়েছে। আবাসনগুলির উপরও কড়া নজর ছিল পুলিশের। কোনও আবাসন থেকে শব্দবাজির আওয়াজ শুনতে পাওয়ামাত্রই ছুটে গিয়েছে পুলিশ। আবার আবাসনে শব্দবাজি রুখতে বেশ কয়েকটি বহুতলের ছাদকেই ওয়াচ টাওয়ার বানায় পুলিশ।
কয়েকটি ছাদ থেকে বাইনোকুলার নিয়ে আশপাশের বহুতলগুলির উপর নজরদারি চালানো হয়। মোট ওয়াচ টাওয়ারের সংখ্যা ছিল ২৭টি। কলকাতার পুলিশ আবাসনগুলিতেও যাতে শব্দবাজি না ফাটানো হয়, এবার সেদিকেও কড়া লালবাজার।