বিএসএনএল নিয়ে তুমুল আন্দোলনের মধ্যেই এবার নতুন প্রকল্প আনছে সংস্থা। জানা গেছে, নভেম্বরের গোড়ার দিকেই আসছে বিএসএনএলের স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প (ভিআরএস)। গতকাল এ কথা জানিয়েছেন সংস্থার সিএমডি পি কে পুরওয়ার। তবে শুক্রবার সংস্থার সদর দফতরে তাঁর শুভেচ্ছা বার্তার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানোর পরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। যেখানে পুরওয়ারের স্পষ্ট বার্তা, সংস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য দ্বিগুণ কাজ করতে হবে কর্মী-আধিকারিকদের। আর তা না পারলে, ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সিদের ভিআরএস নিয়ে সরে যাওয়াই ভাল। বিএসএনএলের ঠিকা কর্মীদের প্রায় আট মাস বেতন বন্ধ প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে জবাব এসেছে, ‘‘এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।’’
পুরওয়ার যা-ই বলুন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবানলের গতিতে সিএমডির বার্তা ছড়িয়ে পড়তেই তেতে উঠেছে কর্মী-আধিকারিক মহলের একাংশ। সকলকে কাজে উৎসাহী করার বদলে, খোদ সংস্থা কর্তার এমন বিবৃতি দুঃখজনক, অপমানকর ও গ্রহণযোগ্য নয় বলে তোপ দেগেছে বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (বিএসএনএলইইউ)। সবকটি ইউনিয়ন একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে বলেও পাল্টা বার্তা দিয়েছে তাঁরা।
দীপাবলির আগে নয়াদিল্লীতে, রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটির সদর দফতরে সিএমডির তরফে কর্মীদের শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া বরাবরের রেওয়াজ। সূত্রের দাবি, প্রাক্তন সিএমডি অনুপম শ্রীবাস্তব গত বছর এই বার্তাতে সংস্থার বেতনক্রম সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এ বার পুরওয়ারের বার্তায় উঠে এসেছে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা, না পারলে বিদায় নেওয়া, ভিআরএসের সুবিধা, ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, পরিষেবা বাড়ানো ইত্যাদি। গত বুধবার বিএসএনএলের জন্য আর্থিক পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে সায় দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। যেখানে তার অঙ্গ হিসাবে ভিআরএসের কথাও বলা হয়। তার পর এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।
শনিবার পুরওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভিডিয়োর কথা এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে স্পষ্ট জানিয়েছেন, কর্মীদের বার্তা দেওয়ার বিষয়টি। বলেছেন, ‘‘কিছু লোক দারুণ কাজ করেন। কিছু নন।…আমি যদি সত্যিটা না বলি, কী করে চলবে! সত্যিটা তো বলতে হবে। যা বলেছি, সচেতন ভাবেই বলেছি। ভিআরএস নিতে কাউকে চাপ দিইনি। সংস্থাকে নতুন রাস্তায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় যদি তাঁদের থাকে, তা হলে তাঁরা রয়ে যাবেন।’’
তবে একই সঙ্গে পুরওয়ার এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলিতে কর্মীদের বেতন খাতে খরচ ৫%। কিন্তু তাঁদের প্রায় ৭০%। বিএসএনএলইইউয়ের সাধারণ সম্পাদক পি অভিমন্যুর দাবি, বেসরকারি সংস্থা বেশির ভাগ কাজই আউটসোর্স করে বলে বেতন খাতে ওই খরচ ধরা হয় না। সেটা ধরা হলে, ওদেরও বেতন-বিল বেশি হত। বরং এর থেকে বেশি লোক নিয়েও এর আগে ১০ হাজার কোটি টাকা নিট মুনাফা দেখেছে বিএসএনএল।