এ যেন মগের মুলুক! পদ্ম চিহ্নের প্রার্থী অপরাধী হলেও তাঁকেই ভোট দিয়ে জয়ী করতে হবে! হ্যাঁ, এবার এমনই নিদান দিলেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। অপরাধীই হোক বা প্রতিবন্ধী, রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন করা উচিত বলেই মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শেষের দিকে নভেম্বর-ডিসেম্বরে ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচন। দীপাবলির পরই তার দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। তাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে দেওঘর জেলার জামতাড়ায় সম্প্রতি একটি কর্মীসভায় গিয়েছিলেন নিশিকান্ত। সেখানে আগত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের অনুরোধ করতে চাই যে বিজেপি যাঁকেই প্রার্থী করুক না কেন, তা তিনি প্রতিবন্ধী, চোর-ডাকাত বা এক জন দুষ্ট লোক হলেও, আমরা তাঁকে সমর্থন করব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ বা মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের উপর আমাদের পুরোপুরি আস্থা থাকা উচিত।’
ব্যাস, আর যায় কোথায়। এই মন্তব্যের পর দলীয় কর্মীদের প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও বিরোধীদের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ নিশিকান্ত। বেগতিক দেখে এখন তিনি জানাচ্ছেন, আসলে রূপক অর্থেই এই মন্তব্য করেছেন। কারণ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কখনওই ভুল প্রার্থী বাছাই করেন না। তাঁর কথায়, ‘দলীয় কর্মীদের বলেছি, ব্যক্তিগত ভাবে কোনও প্রার্থীকে যদি অপরাধী বা প্রতিবন্ধী বলে মনেও হয়, তা সত্ত্বেও তাঁদের সমর্থন করাটা দায়িত্ব। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দলীয় সভাপতি অমিত শাহ বা আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস কখনওই অযোগ্য কাউকে প্রার্থী হিসাবে বাছবেন না।’
তবে নিজের মন্তব্যের সাফাই দিলেও তা মানতে নারাজ বিরোধী দলের নেতা হেমন্ত সোরেন। ঝাড়খণ্ডের মুক্তিমোর্চার ওই নেতা এ নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এতে বিজেপি সাংসদের বস্তাপচা ও অসংসদীয় মনোভাবই ফুটে উঠেছে। তিনি নিজেকে দ্বিতীয় চাণক্য মনে করেন। কিন্তু, তাঁর মন্তব্যে বিজেপির অন্দরের ভয় আর হতাশার প্রতিফলন ঘটেছে।’ হেমন্ত সোরেনের মতে, ‘রাজ্যে আসল সমস্যাগুলি হল কর্মসংস্থানের অভাব, মুদ্রাস্ফীতি, দুর্নীতি, স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু বিজেপি চোর-ডাকাতকেই প্রার্থী করে আমাদের ঘরে আরও লুঠপাট করতে চায়।’ সেই লোকসভা ভোটের আগে থেকেই মুখ খুলে বিপত্তি বাঁধাচ্ছেন একের পর এক বিজেপি নেতা। এবার সেই বেঁফাস মন্তব্যকারীদের দলে সামিল হলেন নিশিকান্তও।