ঘরোয়া সরঞ্জামই মেটাতে পারে বিদ্যুতের ঘাটতি। এমনই দিশা দেখাচ্ছেন আইআইটি খড়্গপুরের অধ্যাপক-গবেষকরা। এক টুকরো ভেজা কাপড়ই হয়ে উঠতে পারে অপ্রচলিত শক্তির উৎস। সামান্য নুন থেকে তৈরি হতে পারে বিদ্যুৎ। কম খরচে বেশি শক্তি উৎপাদন তো বটেই, এই প্রক্রিয়া বৃহত্তর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারলে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে আঁধার ঘুচবে চিরতরে। এমনটাই হাতে নাতে প্রমাণ দিল খড়্গপুরের অধ্যাপকেরা৷
সৌর বিদ্যুতের থেকেও কম খরচে এবং সহজে এই নুন ও ভেজা কাপড় থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এই প্রকল্পের মুখ্য গবেষক আইআইটি খড়গপুরের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ডঃ সুমন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “নুন সব বাড়িতেই থাকে। জামাকাপড় শুকোনো দৈনন্দিন গেরস্থালির কাজের একটা বড় অঙ্গ। কাজেই এই দুই উপাদানকে যদি একসঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়, তাহলেই অবিশ্বাস্য ফল মিলবে। কম সময়ে এবং অবশ্যই কম খরচে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা যাবে।”
কীভাবে সম্ভব হবে এই প্রক্রিয়া? অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নুন মানেই তাতে থাকবে সোডিয়াম। অন্যদিকে, জামাকাপড়ে থাকে সেলুলোজ জাতীয় টেক্সটাইল। এই দুই মিলেই একটা চ্যানেল তৈরি করে। নুন জলে কাপড় ভিজিয়ে রাখলে দেখা যায়, স্যালাইন জলের আয়ন এই সেলুলোজ দ্বারা বাহিত হয়ে একটা ছোটো চ্যানেল তৈরি করে। কম পরিমাণে হলেও শক্তি উৎপাদিত হয়। এই শক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে অন্তত একটা এলইডি বাল্ব জ্বালানো সম্ভব। এইভাবে যদি অজস্র চ্যানেল তৈরি করা যায়, তাহলে শক্তি উৎপাদনের হারও বাড়বে।
একবাটি নুন জল এবং একটা কাপড়, কয়েক মিলিওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে যাকে কাজে লাগালে আমাদের দেশের গ্রামগুলো আর অন্ধকারে থাকবে না। এই রাজ্যেরই অনেক জায়গায় এখনও বিদ্যুৎ শক্তি পৌঁছয়নি। এই প্রক্রিয়ার প্রয়োগ ঘটাতে পারলে সেই সমস্যা অচিরেই দূর হবে, বলেছেন অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী।
অধ্যাপক বলেছেন, গ্রামেগঞ্জে যেখানে সোলার প্যানেল এখনও পৌঁছয়নি, অপ্রচলিত শক্তি উৎপাদনেরও নানাবিধ সমস্যা রয়েছে সেখানে এই সহজসরল প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।