আমহার্স্ট স্ট্রিটে কালীপুজোকে যে ভাবে সকলে এক ডাকে সোমেন মিত্রের কালীপুজো নামে জানেন, ঠিক সেভাবেই বউবাজারের ৪৮ পল্লি যুবশ্রীর কালীপুজো মধ্য কলকাতার আমজনতার কাছে তাপস রায়ের কালীপুজো নামে পরিচিত। তেমনি জানবাজারে কালীপুজো একই ভাবে স্বর্ণকমল সাহার পুজো নামে পরিচিত।
কলকাতায় তৃণমূলের অধিকাংশ তাবড় নেতারা দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেও অনেকেই কালীপুজোর সঙ্গে যুক্ত। কেন তিনি শক্তির আরাধনা করেন, তার এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাপস রায়। সোমেন মিত্র, তাপস রায়, স্বর্ণকমল সাহা, সন্তোষ পাঠক, অমিতাভ চক্রবর্তী-সহ রাজ্যের বড়-ছোট একঝাঁক এমন নেতা রয়েছেন যাঁরা কালীভক্ত রাজনীতিবিদ।
স্কুলে পড়তে পড়তে বউবাজারের ৪৮ পল্লির কালীপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তাপস রায়। তিনি জানান, “আমাদের বর্ধমানের আদিবাড়িতে কুলদেবতা হলেন সিংহবাহিনী। কলকাতায় স্কুলে পড়তে পড়তেই এই কালীপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলাম। তখন স্বেচ্ছাসেবক ছিলাম। বয়স বেড়েছে আর এই পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে গিয়েছি। আমি মা কালীর ভক্ত। প্রায় চার দশক হল এই পুজোর দায়িত্ব সামলাচ্ছি”।
সত্তরের দশকের নকশাল আন্দোলনের উত্তাল দিনে সোমেন নিজে সামনে নেতৃত্বে থেকে আমর্হাস্ট স্ট্রিটে প্রতিমা আনতেন। উত্তর কলকাতার অলিগলিতে তখন আকছার গুলি-বোমার লড়াই। ছোড়দার পুজোর প্রতিমা নির্বিঘ্নে আমহার্স্ট স্ট্রিটে যাতে পৌঁছয়, সে জন্য পুলিশ মোতায়েনও হত। একদা এই তল্লাটে ফাটা কেষ্টর পুজোর সঙ্গে ছোড়দার পুজোর মারকাটারি প্রতিযোগিতাও চলত।
গত অর্ধ শতক ধরে জানবাজারের কালীপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা। এক সময়ে জানবাজারে তস্য গলির মধ্যে এই পুজো হত। ১৯৬৯ সালে দুই সহযোগীর সঙ্গে উদ্যোগী হয়ে স্বর্ণকমল এই পুজো এসএন ব্যানার্জি রোডে নিয়ে আসেন। তখন স্বর্ণকমল পুজোর যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। সেই থেকে দীর্ঘ পঞ্চশ বছর ধরে কখনও সম্পাদক, কখনও সভাপতি, কখনও মুখ্য পরামর্শদাতার ভূমিকায় রয়েছেন এই তৃণমূল নেতা।