বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের। বাবুলকাণ্ডের ঠিক একমাস পর শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্টের বৈঠকে গিয়েও বিতর্কের সঙ্গে নিজের নাম জড়িয়ে ফেললেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে কাদের ডিলিট-ডিএসসি দেওয়া হবে তা নিয়েই গতকাল কোর্ট বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সাধারণত এই ধরনের বৈঠকে রাজ্যপাল উপস্থিত থাকেন না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য পদাধিকার বলে উপস্থিত হয়েছিলেন ধনকড়। এবং বৈঠকে ডিলিট ও ডিএসসি দেওয়ার জন্য যাদের নাম প্রস্তাব করা হয় তা শুনে বেঁকে বসেন তিনি। কর্মসমিতির প্রস্তাবিত নাম নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেন। একাধিক রাজনৈতিক মন্তব্যও করে বসেন যাদবপুর থেকে বেরানোর সময়ে। যা দেখে ‘বিস্মিত’ শিক্ষক মহল। এমন ঘটনা ‘অভূতপূর্ব’ বলেই তাদের মত।
প্রসঙ্গত, গতকাল কোর্টের বৈঠক শেষের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাজ্যপাল বহু রাজনৈতিক মতামত দেন এবং মন্ত্রীদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। এ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নাম সরাসরিই তোলেন তিনি। যার সমালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান এবং কোর্ট সদস্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি রুমে কোর্টের বৈঠকের শেষে উনি সাংবাদিকদের সামনে যেভাবে রাজনৈতিক মতামত জানিয়েছেন, তা কখনওই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিমা এতে নষ্ট হল।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘আজ রাজ্যপাল যা করেছেন, তা অভূতপূর্ব! বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে তিনি এসেছিলেন। এর পর সেই বৈঠকস্থলে দাঁড়িয়েই একের পর এক রাজনৈতিক মন্তব্য করেছেন। এ ঘটনা অতীতে ঘটেনি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হল।’ যাদবপুরে কোর্টের সদস্য তথা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ‘ওয়েবকুটার’ সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজ্যপাল যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়েই আরও বেশি কিছু বলতেন, তা হলে বিষয়টি শোভন হত, ভালও লাগত। তিনি যে ভাবে রাজনৈতিক মন্তব্য করেছেন, তা কখনওই কাঙ্ক্ষিত নয়।’