রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মালদার ইংরেজবাজার। লকআপে এক বন্দিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে মৃতের পরিবার ও গ্রামবাসীদের একাংশ ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর করে। তিনটি পুলিশের গাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। এমনকি থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। তাঁদের হাতে আক্রান্ত এক এএসআইকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম এনামুল খান (৫০)। তাঁর বাড়ি নিয়ামতপুর গ্রামে। রবিবার লক্ষ্মী পূজোর দিন নিয়ামতপুরের বিভিন্ন জায়গায় জুয়ার ঠেক চলছিল। সেই খবর পেয়ে মিল্কি পুলিশ ফাঁড়ির অফিসাররা সিভিক ভলান্টিয়ার এবং কনস্টেবলদের নিয়ে নিয়ামতপুর এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশি অভিযানে ধরা পড়ে যায় এনামুল খান নামে এক ব্যক্তি। তাকেই মিল্কি ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে আসে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের। এরপরই পুলিশ ফাঁড়িতে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় এনামুল খানের।
এনামুলের ভাই জলিল খান বলেন, “জুয়া খেলার অভিযোগে দাদাকে মিল্কি পুলিশ ফাঁড়ির অফিসাররা ধরে নিয়ে গেল। সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় দাদা গেল। হঠাৎ কী করে তাঁর মৃত্যু হতে পারে ভেবে পাচ্ছি না আমরা। পুলিশ বলছে, দাদা নাকি অসুস্থ ছিল। যদি অসুস্থই হত, তা হলে হাসপাতাল কেন তাকে ভর্তি করানো হল না”।
রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ইংরেজবাজার থানার মিল্কি পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশ আবাসন থেকে অফিস ঘর সমস্তই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকল কর্মীরা। সোমনাথ অধিকারী নামে এক এএসআইয়ের মাথা ফেটে গেছে। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে।
এ দিকে মিল্কি পুলিশ ফাঁড়ির এক অফিসার জানিয়েছেন, জুয়া খেলার অভিযোগে এনামুলকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু সে যে অসুস্থ ছিল তা তাঁরা জানতেন না। হঠাৎ করেই ওই ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করে। মিল্কি গ্রামীণ হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও হয়েছিল। পরে তার মৃত্যু হয়। এরপরই মৃতের পরিবারের লোকেরা ফাঁড়িতে এসে পুলিশকর্মীদের উপর হামলা চালায়। গাড়ি ভাঙচুর করে এবং ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।