কথায় আছে, “কুসন্তান যদি বা হয়, কুমাতা কদাপি নয়”। এবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এল এমনই দুই কুসন্তানের কথা, যারা নিজেদের জন্মদাত্রী মায়ের গায়ে হাত তুলতে পর্যন্ত দ্বিধাবোধ করে না!আর শুধু তাই নয়, মাকে মেরে ফেলতে অবধি কুন্ঠাবোধ করে না। মাকে মারধর করে খুন করার এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে।
মাকে খুন করে মেরে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁরই দুই মেয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনায় উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের দেবীনগর রামকৃষ্ণপল্লী জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শনিবার সকালে রায়গঞ্জের এই এলাকার গোয়ালপাড়া পাতপুকুর থেকে কৃষ্ণা দে রায় নামে এক স্কুল শিক্ষিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সকলে বুঝতে পারে মেয়েরাই খুন করেছে মাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জের পূর্ব কলেজপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা দেবীনগর রামকৃষ্ণপল্লীর বাসিন্দা কৃষ্ণা দে রায় মহা অষ্টমীর দিন থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর দুই মেয়ে শ্রেয়া রায় এবং অপর মেয়ে মায়ের নিখোঁজের বিষয়ে কাউকে কিছু জানায়নি। করেনি মিসিং ডায়েরিও। শনিবার সকালে গোয়ালপাড়ার পাতপুকুর থেকে কৃষ্ণাদেবীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, কৃষ্ণাদেবীর দুই মেয়ে তাঁর ওপর চরম শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। এই বিষয় নিয়ে কৃষ্ণাদেবী স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। তাঁকে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবু মাতৃস্নেহের বশে তিনি মেয়েদের নামে থানায় অভিযোগ করেননি। এরপর কিছুদিন শান্ত থাকার পর পুজোর সময় থেকে আবার অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। গত ৬ অক্টোবর অষ্টমীর দিন থেকে নিখোঁজ ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা কৃষ্ণা দে রায়।
এ বিষয়ে মেয়ে শ্রেয়াকে প্রশ্ন করা হলে সে জানায়, “মা-এর খোঁজ করিনি, ভেবেছিলাম মামারবাড়ি গেছে। ফিরে আসবে। ” এরপরেই সন্দেহ বাসা বাঁধে স্থানীয়দের মধ্যে। রোষ গিয়ে পড়ে মৃতার দুই মেয়ের ওপর। ঘটনার পরে দেবীনগরের বাড়িতে ফিরে এলাকাবাসী মারধোর শুরু করে দুই মেয়েকে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্থানীয়দের দাবি, দুই মেয়ে বাড়িতেই খুন করে গোয়ালপাড়ার পুকুরে ফেলে এসেছে মা-এর দেহ। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযুক্তদের। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মায়ের সাথে কোনও রকম অশান্তি বা অত্যাচারের কথা অস্বীকার করেছে অভিযুক্তরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।