এতদিন অবধি মাত্র একটাই টেস্ট হয়েছে পুণেতে। সেই ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে হওয়া টেস্ট ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছিল তিন দিনে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল তারপর পুণের পিচকে ‘পুওর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আগামীকাল থেকে শুরু হতে চলা দ্বিতীয় টেস্টে ক্রিকেটমহলের নজর থাকছে পুণের সেই বাইশ গজে।
২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ধরলে ঘরের মাঠে এখনও পর্যন্ত ৩০ টেস্ট খেলেছে ভারত। তার মধ্যে জয় এসেছে ২৪টিতে। ড্র হয়েছে ৫টি। আর পরাজয় দুই বছর আগের সেই পুণে টেস্টে। সেই টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার ও’কিফি নিয়েছিলেন ১২ উইকেট। ভারতের প্রথম ইনিংসে উঠেছিল ১০৫ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৭। দুই দলের স্পিনাররা মোট ৩১ উইকেট নিয়েছিলেন। এ বারও কি তেমনই হবে, সেই নিয়েই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে আশঙ্কা।
প্রাথমিক ভাবে অবশ্য আউটফিল্ডের মতোই সবুজ দেখিয়েছিল পুণের উইকেটকে। তবে গ্রাউন্ডস্টাফরা মঙ্গলবার থেকেই ঘাস ছাঁটতে শুরু করে দিয়েছেন। টস করার সময় কতটা ঘাস থাকবে, তা জানার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই দুই দলের। তবে ভারতীয় দল জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা পিচ নিয়ে খুব একটা চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন বলে মনে করে না। যে কোনও রকমের উইকেটেই সফল হওয়ার মতো রসদ বিরাট কোহালির দলে রয়েছে।
এমনিতে পুণের পিচ কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে পাটা হিসেবেই চিহ্নিত। এখানে হওয়া ২৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে খুব একটা ব্যাটিং-বিপর্যয়ের কাহিনি নেই। বরং দুটো ত্রিশতরান, তিনটি দ্বিশতরান রয়েছে। ১০বার দেড়শোর উপরে রান করেছেন ব্যাটসম্যানরা। আর অর্ধেক প্রথম শ্রেণির ম্যাচেরই ফয়সালা হয়নি। তার মানে ব্যাটসম্যানরাই এখানে সুবিধা পান। কিন্তু এখানে হওয়া একমাত্র টেস্টে স্পিনাররা শুধু সুবিধাই পাননি, তিন দিনে ম্যাচে দাঁড়ি টেনে দিয়েছিল। আর ফলাফল গিয়েছিল ভারতের বিপক্ষে।
এই মাঠের কিউরেটর পাণ্ডুরঙ্গ সালগাওকর আবার এক সময় স্টিং অপারেশনের ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলেন। যার ফলে পুণে ক্রিকেট সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল তাঁকে ছয় মাসের জন্য নির্বাসিত করেছিল। তবে এখন ফের তিনিই দায়িত্বে। দুই বছর আগে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্টের পিচ ‘পুওর’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার নেপথ্যে তিনি টিম ম্যানেজমেন্টের নির্দেশ ও বোর্ডের কিউরেটরের শেষ মুহূর্তে পিচের চরিত্র বদলের চেষ্টাকে দেখিয়েছেন। এ বার অবশ্য তেমন কোনও ব্যাপার নেই।
বৃষ্টির আশঙ্কা যদিও রয়েছে। তবে নিকাশী ব্যবস্থায় আধ ঘণ্টার মধ্যে মাঠ শুকিয়ে ফেলার আত্মবিশ্বাস সঙ্গী হচ্ছে। পিচের প্রস্তুতি অবশ্য ব্যাহত হয়েছে বর্ষার কারণে। আর তাই এই মাঠে হওয়া প্রথম টেস্টের মতো শুকনো উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা কম। আর সে ক্ষেত্রে স্পিনারদের তুলনায় পেসাররা বেশি সুবিধা পেতে পারেন। অবশ্য মহম্মদ শামি বিশাখাপত্তনমেই দেখিয়েছেন, উইকেট পাওয়ার জন্য পছন্দের পিচের দরকার পড়ে না ভারতীয় পেসারদের! তাই আপাতত পিচ নয়, দল নিয়েই চিন্তাভাবনা করছেন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।