মগনলাল মেঘরাজের ডেরায় দৌড়াদৌড়ি তুঙ্গে। কেউ গুগল করছে, কেউ টুইটার টানা ঘেঁটে যাচ্ছে। ইয়ে ভিদ্যা সাগর কৌনো ফেমাস ম্যান কেউ আছে কী? মছলিবাবার মতো গডম্যান থে ক্যা? না রিচ ম্যান লাইক ঘোষাল পরিভার? নাকি পরদোস মিটার এর মতো ইন্টেলিজেন্ট? না উয়ো আংকেলজীর মতো রাইটার? ভিদ্যা বালান তো জানি পার কৌন থে ইয়ে ভিদ্যাসাগর যার জন্য বাংগালী লোগ ইতনা গুসসা দেখাচ্ছে?
হিসেবে খানিকটা গন্ডগোল করে ফেলেছিল ট্রেনে বাসে করে দূর দূরান্তর থেকে আসা ভক্তকূল। ওই জয়বাবা ফেলুনাথে ও যেমন ফেলুদাকে মারতে গিয়ে দুম করে দামী ফ্লাওয়ার ভাসটা গুলি করে ভেঙে ফেলেছিল, কলকত্তা তে ও ওই ফ্লাওয়ার ভাস ভেবেই হয়তো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরে অবক্ষ মূর্তি দিয়েছেল গুড়িয়ে কিছু দামাল ছেলে। কৌন হবে কে জানে?
বাঁড়ুজ্যে বামুন, কিন্তু সারা জীবনে কখনো ধর্মাচরণ করেনি। মাথা ইয়া বড়, উয়ো সিপিএম কে গৌতম দেব জাইসা ফেস কাটিং আর টাক দিলাম গুড়িয়ে সরকার। বুরবাকের তনখা কেটে নেবার কোন আদেশ দিয়েছে কিনা মেঘরাজজী তা জানা যায়নি।
আজ বিদ্যাসাগর হয়েছে কাল রামমোহন রায় হতেই পারে। তারপর ডিরোজিও কে এন্টি ন্যাশনাল বলে ভেঙে ফেলবে। এন্ড্রুজকে ভারতের শত্রু বলে৷ নেহাত স্বামীজী গেরুয়া পরিধান করতেন তাই প্রোটেকশন পাবে, নয়তো ওনার ও চাপ ছিল।
ফেলুদা, পদিপিসি আর সিধু জ্যাঠার সাথে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। বিদ্যাসাগর সম্বন্ধে জানাতে হবে মেঘরাজজীর চ্যালা চামুণ্ডাদের। রুকু, মুকুল, তোপসেদা বা আমরা ছোট থেকেই এদের নিয়ে পড়াশোনা করেছি। ওরা করেনি। তাই ওদের কাছে হিন্দু-মুসলমান একটা বড় ব্যাপার, পার্ক স্ট্রিট গিয়ে বিফ স্টেক খাওয়া ও আর বিধবা বিবাহ ও। তাই বিদ্যাসাগর, রামমোহনের সময় এদের সরকার থাকলে তো পিটিয়ে মারা হতো হিন্দুবিদ্বেষী, পাকিস্তানের চ্যালা বলে।
আমি ঠিক করেছি যেখানে যেখানে আমার অবাঙালি বন্ধু বেশী সেখানে বিদ্যাসাগর নামটা উচ্চারণ করবো বা লিখবো বা সেঁটে দেবো। যেমন ধরুন টুইটার বা ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার হিসেবে বা ব্লগ লেখায় বা হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে। মেসেঞ্জার হোক, রেল স্টেশনে হোক, গেরুয়া কাটআউটে হোক, বিদ্যাসাগরের স্নেনসিলে আঁকা অবয়ব স্প্রে করে দিক ক্যাপ্টেন স্পার্ক আর অরন্যদেবরা। গোটা দেশে কৌতূহল হোক এই বিদ্যাসাগর নিয়ে। প্রশ্ন করুক, গুগল করুক, মাথা চাপরাক। আমরা থামবো না। ততক্ষণ অবধি টুইট করেই যাবো, দিল্লি বম্বে পুনেতে ফরোয়ার্ড করেই যাবো যতক্ষণ না বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে ফেলার জন্য ক্ষমা চায় ওরা।
ভূতের রাজা মধ্যরাতে কলেজস্ট্রিটের ফাঁকা ফুটপাথে বলে গেছে এখন দরকার Resistance। কে তৃণমূল, কে সিপিএম, কে এসইউসি, কে কংগ্রেস, কে ক্যাপ্টেন স্পার্ক, কে মৃত নকশাল নেতা, কে পাগলা দাশু, কে হিজিবিজবিজ না ভেবে Resistance।
যখন গন্ডারিয়া আর মগনলাল মেঘরাজ আমাদের রুপকথার শহরটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে একশেষ করে দিতে চাইছে তখন অ্যাভেঞ্জার্স এর মতো এককাট্টা হতে হবে। পরে বুঝে নেবো চোর, চিটিংবাজ, তোলাবাজদের। আগে আমার প্রিয় শহরকে বাঁচাই থ্যানোসের থেকে।
মাথায় রাখবেন আমাদের কাছে সব সত্যি। মহিষাসুর সত্যি, রাম সত্যি, হনুমান সত্যি, ক্যাপ্টেন স্পার্ক সত্যি, টারজান সত্যি, অরণ্যদেব সত্যি, হিজিবিজবিজ….।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত