আসামে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। আতঙ্ক বাড়ছে এই রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেও। এরই সঙ্গে অনুঘটকের মতো কাজ করেছে বিজেপি নেতাদের ক্রমাগত হুঁশিয়ারি যে বাংলাতেও এনআরসি করা হবে। যথাযথ নথি না থাকলে নাগরিকত্ব হারানোর ভয় পাচ্ছেন অনেকে। এনআরসি-তে নাগরিকত্ব হারানোর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন ধূপগুড়ির বাসিন্দা শ্যামল রায়। ধুপগুড়ির পর এ বার জলপাইগুড়িতে আত্মঘাতী হলেন আরও একজন। এনআরসির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে না-পেরেই এক যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ। কোচবিহারের কোতোয়ালিতেও এক মহিলা একই কারণে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ।
কোচবিহার ১ নম্বরের ঘুঘুমারির হাওয়াগাড়ি এলাকার বাসিন্দা আরজিনা খাতুন। জানা গিয়েছে, ভোটার কার্ডে তাঁর নাম ছিল আরজিনা খাতুন। কিন্তু আধারে নাম ছিল আরজিনা খাতুন বিবি। একই সমস্যা ছিল তাঁর স্বামীর নথিতেও। তাঁর ভোটার কার্ডে নাম আনোয়ার মিঞা থাকলেও আধারে ছিল আনোয়ার হোসেন। ফলে তাঁরা আতঙ্কে ভুগছিলেন। নথি সংশোধনের জন্য বিডিও থেকে পঞ্চায়েত অফিস সব জায়গাতেই যান আরজিনা। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। পরে মঙ্গলবার সকালে ঘর থেকেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হন ওই মহিলা। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মৃতের পরিবারের দাবি, এনআরসি আতঙ্কের জেরেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আরজিনা।
এনআরসি আতঙ্কের জেরে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুরে আত্মঘাতী হন সাবের আলি নামে এক যুবক। তিনি কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, নাগরিক পঞ্জির প্রয়োজনীয় নথি জোগার করা নিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন সাবের। সেগুলি জোগাড় করতে না-পেরেই চরম হতাশায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।