যখন গোটা দেশে মিড-ডে মিলের খাবারের মান নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে, ঠিক সেই সময়েই অন্য ছবি দেখা গেল বর্ধমানের একটি প্রাথমিক স্কুলে। মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের খাবার খাইয়ে নজির গড়েছে সেখানকার স্কুল কর্তৃপক্ষ। খাদ্যতালিকা মেনে পড়ুয়াদের পাতে পড়ছে দুধ, আপেল, ডিম। শুধু তাই নয়, মাসে এক দিন করে মিলছে মাংসও। শেষ কয়েক বছর ধরে এমন বাহারি পদই পাচ্ছে বর্ধমানের বিজরামের শম্ভুচরণ গুহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
২০১৬ সালে ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন বিপ্লব সাঁই। এরপর নিজের উদ্যোগেই মিড-ডে মিলের খাদ্যতালিকায় বদল এনেছেন তিনি। মেনুতে যোগ হয়েছে একাধিক পদ। স্কুলের ভিতরেই টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই মেনু। সোমবার ভাতের সঙ্গে মিলবে ডিম, আলুর ঝোল, সবজি। মঙ্গলবার আলুপোস্ত ভাত ও দুধ। বুধবার ডিম, আলুর ঝোল। আলু ও সবজি দিয়ে তরকারি। বৃহস্পতিবার আলু-সোয়াবিনের তরকারি শেষে চাটনি। শুক্রবারও একই মেনু শুধু চাটনির পরিবর্তে আপেল। শনিবার সবজি দিয়ে খিচুড়ি, চাটনি। আর মাসে একদিক মুরগির মাংস।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, নিজেদের পকেট থেকে কোনও খরচ না করে, সরকারের দেওয়া টাকাতেই এমনটা সম্ভব হচ্ছে। কারণ, খুব নিপুণভাবে হিসেব করে গোটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, “একবারে সারা মাসের বাজার করা হয়। কয়েক দিনের মেনুতে ভাতের সঙ্গে শুধু আলু, সবজি, সোয়াবিন, কুমড়ো রাখা হয়েছে। ফলে সেই দিনগুলোর খরচ অন্যদিনের তুলনায় অনেকটাই কম। ফলে ওই দিনের খাবারে বেঁচে যায় কিছুটা টাকা। আর সেই টাকা দিয়েই কেনা হয় আপেল, দুধ।
তাঁর কথায়, “প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা বেশির ভাগই দরিদ্র পরিবারের। তাই মিড-ডে মিলের খাবারে তারা যাতে মন ভরে খেতে পারে সেই চেষ্টা করেছি। তাতেই সফল হয়েছি। নানা আধিকারিক ও স্থানীয়রা স্কুলের এই মেনু দেখে প্রশংসা করেন।” স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, “স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি হলেও সততার সঙ্গে কাজ করলেই পড়ুয়াদের একটু ভাল খাওয়ানো যায়।”