প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে তাঁরা। কখনো ঘর সামলাচ্ছেন, কখনো ঘরের মানুষদের। বাইরের জগতেও এখন তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজোতেও তাঁরা নিজেদের কাঁধে অনেক দায়িত্ব তুলে নিচ্ছেন। কখনো ঠাকুর গড়ছেন। কখনো বা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে একটা গোটা পুজো করছেন। আর তাই মহিলা শিল্পীদের স্বার্থরক্ষায় এবার জোট বাঁধল বাংলার মহিলা পরিচালিত পুজোগুলি।
গড়িয়াহাট হিন্দুস্থান ক্লাব সর্বজনীন থেকে লিলুয়ার ত্রিপুরা রোড মহিলাবৃন্দ, সন্তোষপুর লেকপল্লি থেকে মহিলাবৃন্দ সর্বজনীন। দেবীপক্ষের আগেই যাত্রা শুরু করল নতুন ফোরাম, ‘বাংলার দুগ্গা’। সব মহিলা শিল্পীদের স্বার্থরক্ষা করবে এই নয়া ফোরাম। সোমবার রোটারি সদনে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলার দুগ্গা’-র কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
এখনও পর্যন্ত পঁচিশটি ক্লাব নাম লিখিয়েছে এই ফোরামে। ‘বাংলার দুগ্গা’ প্রসঙ্গে চন্দ্রিমা জানান, ‘মহিলা পরিচালিত যে কোনও ক্লাব, সংগঠন বা পুজো কমিটি এখানে নাম লেখাতে পারবে। এই ফোরামের মূল উদ্দেশ্য, সামাজিক কর্মযজ্ঞে মহিলাদের আরও বেশি করে যুক্ত করা।’ চন্দ্রিমার পর্যবেক্ষণ, এখন মহিলারা পুজোয় ঢাক বাজাচ্ছেন, ঠাকুর বানাচ্ছেন, পুজোও করছেন। তাঁদের একটা তথ্যপঞ্জি তৈরি করা হবে। তারপর দেওয়া হবে স্বীকৃতি। পুজোর বাজারে মহিলাদের যত বেশি করে যুক্ত করা যাবে ততই অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। নতুন পুজো ফোরাম মহিলাদের নিয়ে মেলা-সেমিনার করবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে চন্দ্রিমার ‘গড়িয়াহাট হিন্দুস্থান ক্লাব সর্বজনীন’ পুজোর থিমের সংগীতের উদ্বোধন করেন নৃত্যশিল্পী তনুশ্রীশংকর। গানটি লিখেছেন চন্দ্রিমা। সুর করেছেন ‘লক্ষ্মীছাড়া’-র দেবাদিত্য। গানটি গেয়েছেন শান্তিনিকেতনের রাজু দাস বাউল। চন্দ্রিমা এদিন মনে করিয়ে দেন, বাংলার ঐতিহ্য মেনে পুজো করতে হবে। বোধন থেকে বিসর্জন, অষ্টমীর অঞ্জলি থেকে দশমীর সিঁদুরখেলা নিষ্ঠা সহকারে করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এবারের পুজোয় নতুন উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুলিশও। জানা গেছে, মহিলা পরিচালিত পুজোগুলিকে আরও উৎসাহ জোগানোর জন্য সেই কমিটিগুলিকে অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে। উপরন্তু মহিলা কমিটিগুলিও রাজ্য সরকারের তরফে পাচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। আর এরমধ্যেই ‘বাংলার দুগ্গা’ ফোরাম যে মহিলা কমিটিগুলিকে এই উৎসবের মরশুমে আরও উৎসাহ জোগাবে, তা বলাই বাহুল্য।