ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রের হাল-হকিকত বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় বিনিয়োগ বাড়ানোকে পাখির চোখ করে বারবারই গিয়েছেন বিদেশ সফরে। সর্বত্রই শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে তাঁর আহ্বান ছিল, রাজ্যে বিনিয়োগের সহায়ক পরিবেশ রয়েছে। আপনারা বাংলায় লগ্নী করুন। এই নিয়ে বারবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হলেও তাদের মুখে ঝামা ঘষে বাংলায় লগ্নীর জোয়ার এনেছেন মমতা। তাঁর উন্নয়নের কর্মযজ্ঞের ফলেই এখন ভারতের দ্রুততম বৃদ্ধি পাওয়া ওয়্যারহাউস ও লজিস্টিক হাব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০০ কোটি টাকার চুক্তি বিভিন্ন পর্যায়ে আছে।
গত বছর কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ৩৫ লক্ষ বর্গফুট ওয়্যারহাউসিং সম্পন্ন হয়েছে। ২ ও ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশের অঞ্চল এই ব্যবসায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই সড়কের ধারে ৫০০ একর জমি নেওয়ার কথা চলছে। এখানে লজিস্টিক মুখী আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন মর্গান স্ট্যানলি, ইএসআর, অলকার্গো লজিস্টিক্স, ইন্দোস্পেস, এম্বাসিরাই বিনিয়োগ করছে। এবং এক্ষেত্রে মূলত ভৌগোলিক অবস্থানের সুবিধাই পাচ্ছে কলকাতা। আসলে দিল্লী রোড, পুরনো দিল্লী রোড, বম্বে রোড মূল শহর থেকে প্রায় ৩০/৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই রাস্তার মাধ্যমেই উত্তর ভারত ও পূর্ব ও উত্তর পূর্ব ভারতে যাতায়াত খুব সহজ। তাই, এইসব বিদেশি সংস্থার মূল লক্ষ্য এইসব রাস্তার আশপাশের অঞ্চল।
এখানে জমির দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে একর পিছু দাম ছিল ৭০ লক্ষ টাকা, তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এরপর ঐ জমির উন্নয়নে প্রতি বর্গফুটে লাগছে ১৫০০ টাকা। একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থার ২০১৮ সালের রিপোর্টে দেখা গেছে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রাজ্যে ৪৩০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে ওয়্যারহাউস ও লজিস্টিক ক্ষেত্রে। এখানে যেসব শিল্প এসেছে, তার মধ্যে আছে এফএমসিজি, ই-কমার্স কোম্পানি যেমন ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন। অনেক সংস্থা এখানে লজিস্টিক হাবেরও জায়গা নিচ্ছে। কলকাতায় ওয়্যারহাউজিং ক্ষেত্রে ২০১৮ সালে ৪৭ লক্ষ বর্গফুট অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ২০১৭ সালে কলকাতায় ওয়্যারহাউজিং ক্ষেত্রে হঠাৎ জমির চাহিদা ১৯১ শতাংশ বাড়ে যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।