আসামে এনআরসি তালিকা বের করার পর থেকেই তটস্থ গোটা দেশ। কোন রাজ্যের ঘাড়ে এইবার এনআরসির খাঁড়া পড়বে সেই নিয়ে চিন্তিত। এর মধ্যেই বাংলায় এনআরসি করার পক্ষে বারবার সওয়াল করছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার মোদী সরকারের এই নীতির বিরোধীতা করেছেন। সাফ কথায় তিনি আরও জানিয়েছেন যে, তাঁর জীবদ্দশায় পশ্চিমবঙ্গে তিনি এনআরসি হতে দেবেন না।আর তারপর থেকেই বিজেপি নেতা-নেত্রী একের পর অশালীন ও বেনজির মন্তব্য করছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এইবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং।
মমতাকে আক্রমণ করে বিজেপির এই নেতার বক্তব্য, এনআরসি পশ্চিমবঙ্গেও প্রয়োগ করা হবে এবং তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বাংলাদেশিদের ধরে রাখতে চান, তাহলে তাঁর জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়াই ভালো। এদিন সাংবাদিকদের সামনে সুরেন্দ্র সিং বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খারাপ দিন ঘনিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন নিয়ে তিনি যদি রাজনীতি করতে চান তাহলে তাঁর বাংলাদেশই চলে যাওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর যদি সাহস থাকে তাহলে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান । তাতে আখেরে তাঁর ভালোই হবে।’
সঙ্গে বিজেপির এই বিধায়ক আরও বলেন যে, পশ্চিমবঙ্গেও লাগু হবে এনআরসি। আর যাঁরা ভারতের নাগরিক হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করবেন না তাঁদের সম্মানজনকভাবে নিজেদের আসল দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সঙ্গে বালিয়ার এই বিজেপি বিধায়কের আরও বক্তব্য, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পি চিদাম্বরমের মতোই উচিত শিক্ষা দেওয়া উচিত।’
এখানেই থেমে থাকেননি ওই বিজেপি নেতা। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির তাক লাগানো ফলাফল নিয়ে রামায়ণের প্রসঙ্গ টেনে সুরেন্দ্র সিং বলেন , ‘লঙ্কার মানুষ হনুমানজিকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। তবে তিনি সেখানে চলে যেতে পেরেছিলেন। একইভাবে যোগী আদিত্যনাথ এবং অমিত শাহও পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছেন এবং আমরা ওখানে অনেকগুলি আসন পেয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন বাংলার রাজনৈতিক রানী (লঙ্কিনী)। সেখানে রাম নিজের পা রেখেছেন এবং এবার শীঘ্রই সরকারে পরিবর্তন আসবে। কটাক্ষের সুরে আরও যোগ করে বলেন ‘বাংলাতেও এনআরসি কার্যকর হবে এবং সমস্ত বাংলাদেশিদের হাতে দুই প্যাকেট খাবার ধরিয়ে শ্রদ্ধাপূর্বক তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’ এই রকম মন্তব্যে সাধারণতই বিতর্ক দেখা দিয়েছে রাজ্যবাসীর মধ্যে। বিজেপি বিধায়কের এহেন কটূক্তি ভালোভাবে নেননি রাজনৈতিক মহল। বিজেপি নেতা-নেত্রী দিনে দিনে নিজেদের শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে ফেলছে বলে মনে করছেন তাঁরা।